Logo

সারাদেশ

আ.লীগের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আলোচনায়

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৫৯

আ.লীগের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আলোচনায়

আওয়ামী লীগের এমপি ছোট মনিরকে ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন বিএনপি নেতা ফকির মাহবুব আনাম স্বপন (বৃত্ত চিহ্নিত)। সংগৃহীত পুরোনো ছবি

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনটি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। ১৯৮১ সালের পর থেকে এ আসনে বিএনপি কখনো জয় পায়নি। সাবেক নেতা ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার, ধনবাড়ি রাজপরিবারের সদস্য আসিকা আকবর কিংবা শিল্পপতি ফকির মাহবুব আনাম স্বপন— বারবার আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন।

বর্তমানে আসনটি ঘিরে বিএনপির ভেতরে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন (স্বপন ফকির) আলোচনার কেন্দ্রে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, বিগত সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছেন। তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে হতাশা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, মামলা-হামলা কিংবা নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের খোঁজখবর না রাখায় তৃণমূল নেতাদের মধ্যে ক্ষোভও আছে।

অভিযোগ রয়েছে, স্বপন ফকির শহরের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিজের ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়েছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগপন্থী রাজনীতিবিদদের সংবর্ধনায় অংশ নেওয়া ও গত কয়েকটি নির্বাচনে পরোক্ষভাবে নৌকা প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগও স্থানীয়ভাবে তোলা হয়েছে। এ বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অন্যদিকে, স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একটি অংশের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমন্বয়ের অভিযোগও উঠে এসেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, উপজেলা ও পৌর পর্যায়ের কয়েকজন শীর্ষ নেতা অতীতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রার্থীকে সহযোগিতা করেছেন এবং তাদের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

এ আসনে বর্তমানে অন্তত চারটি ভিন্ন গ্রুপে বিএনপি কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে। এসব গ্রুপ আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করেছে। ফলে সাংগঠনিকভাবে ঐক্যহীনতা দৃশ্যমান।

তৃণমূলের অনেকে মনে করছেন, এসব কারণে বিএনপি যদি স্বপন ফকিরকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আসন্ন নির্বাচনে দলের ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী সংগঠনটির দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে এগিয়ে থাকার চেষ্টা করছে।

এ প্রসঙ্গে ফকির মাহবুব আনাম স্বপন বলেন, তিনি শমশের ফকিরের নাতি এবং একটি স্থানীয় কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় আমাকে। সেসময় ভূঞাপুর-গোপালপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছোট মনিরকে ভূঞাপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সংবর্ধনা দেয়ার উদ্যোগ নেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তাদের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজ থেকে এমপি ছোট মনিরকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বলা হয়। নাহলে জামায়াত-বিএনপির প্রতিষ্ঠান বলে বন্ধ করে দেয়ার হুমকি প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের কথা বিবেচনা করে আমি বাধ্য হয়ে উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলাম এবং সেখানে আওয়ামী লীগের এমপি মনিরের হাতে ক্রেস্টটি তুলে দেওয়া হয়।’

গত বছর জুলাই আন্দোলনে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ এখন মাঠে নেই। রাজনৈতিক দলটির কার্যক্রম এখন নিষিদ্ধ। ফলে আগামী সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-১ আসনে বিএনপি নাকি জামায়াত প্রার্থী এগিয়ে থাকবে তা নিয়ে চলছে সমীকরণ। স্থানীয় বিএনপির ভেতরের দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিংয়ের কারণে জামায়াত কি এগিয়ে যাবে ভোটের মাঠে? নাকি ভোটের মাঠে লড়াইয়ের আগে বিএনপি নিজেদের ভেতরের সমস্যা মিটিয়ে নেবে? তেমনটা হলে দলীয় মনোনয়নে এগিয়ে থাকবেন কে? আর বিএনপি-জামায়াতের লড়াই জমবে কতটা, এসব প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। 

এমআর/এইচকে/ 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সংসদ নির্বাচন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর