বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ১৩ মাস পর ফেনীতে সাংবাদিকদের নামে হত্যাচেষ্টা মামলা
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:২৮
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলা ও মারধরের ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। ১৩ মাস পর বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী এনায়েত উল্যাহ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দৈনিক দেশ রূপান্তরের ফেনী জেলা প্রতিনিধি ও জুলাই আন্দোলন চলাকালে আহত শফি উল্লাহ রিপন, দৈনিক ফেনীর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাখাওয়াত হোসেন ডন চৌধুরী এবং দৈনিক ফেনীর নিজস্ব প্রতিবেদক সাহেদ সাব্বিরকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া মামলায় ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজিসহ ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৫০–১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে করা হয়েছে। বাদী এনায়েত উল্যাহ সোনাগাজী উপজেলার পূর্ব সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট দুপুরে ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুলি চালায়। এতে বাদীসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় ৯ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা দেওয়া হয়। পেশায় শ্রমিক হওয়ায়, দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়া ও পরিবারের খরচ বহনের কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়।
এ ঘটনায় সাংবাদিকদের নাম জড়ানোর কারণে ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিকরা বলেন, মামলার নামে কণ্ঠরোধের চেষ্টা হচ্ছে। তারা সাংবাদিক হয়রানির প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।
বাদী এনায়েত উল্যাহ জানিয়েছেন, আহত হওয়ার কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে। তিনি বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকেই আমি চিনি।”
ফেনী জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম বলেন, এক বছরের বেশি সময় পরে মামলা করা প্রশ্নবিদ্ধ। মূলত গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত মামলাগুলোকে দুর্বল করার এবং জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যেই এসব মামলা করা হচ্ছে।
এমরান পাটোয়ারী/এআরএস

