Logo

সারাদেশ

বাঁশের সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে, বিপাকে ৫ গ্রামের মানুষ

Icon

রাখিবুল হাসান রাখিব, মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:১৩

বাঁশের সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে, বিপাকে ৫ গ্রামের মানুষ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নের রামনাথেরপাড়া এলাকায় এক বছর আগে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকার কারণে আশপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দৈনন্দিন চলাচলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।

স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো দিয়ে সেতুর সাথে অস্থায়ী সংযোগ তৈরি করেছেন। প্রতিদিন শতশত মানুষ, শিক্ষার্থী, এমনকি রোগী ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো বেয়ে চলাচল করছেন। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকায় সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মেসার্স মুনতাহা কন্সট্রাকশনকে। মূল সেতুর কাজ প্রায় এক বছর আগে শেষ হলেও সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ রোড) এখনও নির্মাণ হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বড় হযরতপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সদুরপাড়া হয়ে একটি হেরিংবন সড়ক রামনাথেরপাড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সেতুর পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওঠানামা করছেন। ফলে রামনাথেরপাড়া, ফতেপুর, নানকর সদুরপাড়া ও কাঠালী গ্রামের প্রায় ২৫-৩০ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, শিশু, বৃদ্ধ ও নারীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এই পথ ব্যবহার করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির সময় বাঁশের সাঁকো পিচ্ছিল হয়ে যায়, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কৃষকরা কৃষিপণ্য পরিবহনে মারাত্মক সমস্যায় পড়ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নিতাই চন্দ্র বলেন, ‘১০-১১ মাস আগে ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু ঠিকাদার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি। এখন ব্রিজটি মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি।’

দলিল লেখক ধনেশ্বর রায় বলেন, ‘পানি হলে বাঁশের সাঁকো একেবারেই পিচ্ছিল হয়ে যায়। নিজের খরচে আমরা গ্রামের মানুষ মিলিয়ে সাঁকো বানাই। ব্রিজ থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্যবহার করা যায় না।’

ব্রীজের ঠিকাদার মেসার্স মুনতাহা কন্সট্রাকশনের আব্দুর রহিম জানান, ‘ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হবে। ব্রিজের পাশে পানি থাকায় এপ্রোচ রোডের কাজ ততদিন সম্ভব হয়নি।’

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিল দেওয়া হয়নি। আমরা কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তাগাদা দিচ্ছি। অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে এবং স্থানীয়রা উপকৃত হবেন।’

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকৌশলী বাদশা আলমগীর বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অধীনে ব্রিজের কাজগুলো পিআইও দেখেন। আমরা কাজ বুঝে নিয়ে ঠিকাদারকে বিল দেব। এখানে আমাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলতামিস বিল্লাহ বলেন, ‘আগের ইউএনও স্যার বদলী হয়ে চলে গেছেন। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও পিআইওর সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জনদুর্ভোগ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর