নরসিংদীতে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আরও একজন নিহত

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৪৯

নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিনে আরও একজন নিহত হয়েছেন। ছবি : বাংলাদেশের খবর
নরসিংদীর চরাঞ্চল আলোকবালীর বীরগাঁও গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিনে আরও একজন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ফেরদৌসী বেগম (৪৫)। তিনি বীরগাঁও গ্রামের রায়েছ আলীর স্ত্রী।
নরসিংদী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগের দিন বৃহস্পতিবার একই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপির কর্মী ইদন মিয়া (৫৫) নিহত হন।
স্থানীয়রা জানান, আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী ও বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য, বালু উত্তোলন ও দখলদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। তারা পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছিলেন। তারা অভিযোগ করেন, এ দ্বন্দ্বে যুক্ত রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
বৃহস্পতিবার ভোরে সংঘর্ষে নিহত হন ইদন মিয়া। একই ঘটনায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার আইয়ুব খান সরকারের ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালান।
ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী বলেন, শুক্রবার দুপুরে কাইয়ুম মিয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে স্পিডবোটে করে গিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এ সময় কাইয়ুমের কর্মীর গুলিতে আমার কর্মী ফেরদৌসী বেগম ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। আমরা কাইয়ুমের বিচার দাবি করছি।
তবে বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দীপু ও বর্তমান সভাপতি আসাদ উল্লাহর লোকজন অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি চালাতে গিয়ে ওই মহিলা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আমার কিংবা আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী এতে জড়িত নয়।
তিনি দাবি করেন, বিএনপির কর্মী ইদন মিয়াকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের লোকজন ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং তার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন খুন হয়েছেন। একই ঘটনার ধারাবাহিকতায় শুক্রবার আরও একজন মহিলা খুন হয়েছেন। কে বা কারা খুনের সঙ্গে জড়িত, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ভুক্তভোগীর কানের নিচের অংশে বড় ধরনের গর্ত রয়েছে। সেটা প্রাথমিকভাবে গুলির চিহ্ন মনে হচ্ছে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হত্যার ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
এমবি