Logo

সারাদেশ

নারায়ণগঞ্জে ৭০ বছর বেদখল থাকা ৬০ কোটি টাকার জমি উদ্ধার

Icon

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:০১

নারায়ণগঞ্জে ৭০ বছর বেদখল থাকা ৬০ কোটি টাকার জমি উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ৭০ বছর ধরে বেদখল থাকা ৬০ কোটি টাকার ২৩ একর জমি উদ্ধার করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়া। ছবি : বাংলাদেশের খবর

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ৭০ বছর ধরে বেদখল থাকা ৬০ কোটি টাকার ২৩ একর জমি উদ্ধার করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়া। জমি দখলকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রানহানীর আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক জমিটি উদ্ধার করেন।

ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, কানুনগো ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর প্রতিবেদন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুপারিশ যাচাই করে জেলা প্রশাসক জমিটিকে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ অনুযায়ী খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। জমি উদ্ধারের পর সেখানে দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাট সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের পাশে এ জমি ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের পর হিন্দু মালিকদের ভারতে চলে যাওয়ার কারণে ৭০ বছর ধরে বেদখল অবস্থায় ছিল। ২০২০ সালে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর লোকজন কৃষকদের কাছ থেকে জমি দখল করে অবৈধ বালুর ব্যবসা করেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরাও জমি দখল করে। ফলে এলাকায় ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রানহানীর আশঙ্কা দেখা দেয়।

খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা কঠোর নির্দেশ দেন আড়াইহাজার উপজেলা প্রশাসনকে, যেন এক ইঞ্চি জমিও আর বেদখল না হয়। জমিটি মালিকবিহীন হিসেবে খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন তিনি।

আড়াইহাজার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নঈম উদ্দীন বলেন, সব দাবিদারকে কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছিল। গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরে শুনানিতে যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, সবাই ভুয়া মালিক। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করেছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস কে মো. মামুনুর রশীদ দ্রুত এ সংক্রান্ত ফাইল জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠান। পরে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম গত মঙ্গলবার (সেপ্টেম্বর ১৬) নথিতে স্বাক্ষর করে জমিটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার আদেশ দেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়া বলেন, এ জমিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে ভবিষ্যতে জমিটি আর বেদখল হবে না। পাশাপাশি স্থানীয়রা পর্যটন সুবিধা থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।

স্থানীয় বিশনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আব্দুল হামিদ ও ফেরিঘাট জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মতিউর রহমান বলেন, আমার দাদা-বাবা এ জমিতে চাষ করতেন। কিন্তু ২০২০ সালে সাবেক এমপি নজরুল ইসলামের লোকজন আমাদের কাছ থেকে জমি বেদখল করে নেয়। সরকার যদি ইকোপার্ক করে, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। শুধু চাই, আর যেন প্রভাবশালীরা দখল করতে না পারে।

ইমতিয়াজ আহমেদ/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর