হরিরামপুরে সরকারি ডাক্তার-কর্মচারীর যোগসাজশে চলছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:০৪
-68d27eafd6b5d.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার-কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশে রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে।
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীরের সঙ্গেই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে। হাসপাতালের এক কর্মচারীর শেয়ার থাকায় সেন্টারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
জরুরি চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল আল্ট্রাসনোগ্রাফি থাকা সত্ত্বেও ডাক্তাররা রোগীদের নানা অজুহাতে ওই বেসরকারি সেন্টারে পাঠাচ্ছেন। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা ডিউটির সময়েও সেন্টারে রোগী দেখছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে সরজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামীম মিয়া রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করছেন। কিছুক্ষণ পর তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটিতে চলে যান। হাসপাতাল সূত্র জানায়, আজ তিনি ডিউটিতে আছেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতাল থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন করা যাবে না। তবে রেইনবো ডায়াগনস্টিক হাসপাতালের পূর্ব পাশের সীমানা প্রাচীরের সাথেই গড়ে উঠেছে।
ডা. শামীম মিয়া বলেন, ‘আমার বাসা হরিরামপুরেই। হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার কেউ নেই। এলাকার লোকজনকে সেবা দেওয়ার জন্য আমি রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করি। রোগী আসলে আমাকে ফোন দেয়, আমি যাই।’
সেন্টারের একজন রোগী নাসরিন জানান, ‘হাসপাতালে ডাক্তার আমাকে পরীক্ষা করতে বললেও আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে আমাকে এখানে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, আজ আল্ট্রার ডাক্তার হাসপাতালে নেই।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, রেইনবো ডায়াগনস্টিকের শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে একজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী সাইদুর রহমান। তবে সাইদুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সেন্টারের ডিএমডি আবুল কালাম আজাদ (টিটু) বলেন, ‘হাসপাতালের মোট শেয়ারহোল্ডার ২২ জন। সাইদুরের শেয়ার নেই। আমার কাছে বৈধ লাইসেন্স আছে। কিভাবে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করতে হবে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. কাজী একেএম রাসেল বলেন, ‘এক কিলোমিটারের নিয়ম আগে ছিল, এখন নেই। হাসপাতালে ডিউটির সময় বাইরে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার বিষয়ে ডা. শামীমকে সতর্ক করা হবে। সরকারি কর্মচারীরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে থাকতে পারেন না।’
আফ্রিদি আহাম্মেদ/এআরএস