Logo

সারাদেশ

সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় রংপুরে কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও, গ্রেপ্তার ২

Icon

সাহানুর রহমান, রংপুর

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৩৫

সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় রংপুরে কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও, গ্রেপ্তার ২

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। এসময় তারা অপহরণ ও হামলার ঘটনায় দায়ীদের তিন দিনের মধ্যে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরপিইউজে), প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের দুই শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নানের সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল, সিটি প্রেসক্লাব সভাপতি স্বপন চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুব রহমান হাবু, নিউজ২৪ ব্যুরো প্রধান রেজাউল করিম মানিক, সময় টিভির নাজমুল আলম নিশাত, প্রথম খবরের নির্বাহী সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বাবলা, প্রথম আলোর জহির রায়হান জুয়েল, এখন টেলিভিশনের মোকাররম হোসাইনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

তারা অভিযোগ করেন, সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ মামলা করার পরও মাত্র দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ করছে, এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেই মামলা করার চেষ্টা করছে। সিটি করপোরেশন মাত্র তিনজন কর্মকর্তাকে বদলি করে দায় সেরেছে, যা ‘আইওয়াশ’ বলে উল্লেখ করেন তারা।

পরে পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী ঘেরাও কর্মসূচিতে এসে সাংবাদিকদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এতে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে নগরীর কাচারীবাজার থেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে রকি নামের এক যুবকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী সাংবাদিক বাদলকে অপহরণ করে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে টেনে-হিঁচড়ে নির্যাতন করা হয় এবং প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। পরে সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় বাদল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমা, ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, সাবেক কাউন্সিলর লিটন পারভেজসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তবে এতদিনে শুধু দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার না হলে এবং সিটি করপোরেশনের জড়িত কর্মকর্তাদের অপসারণ না করা হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।’

এদিকে পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, ‘দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, যেখানে আরও কয়েকজনের নাম এসেছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে এবং দ্রুত চার্জশিট দাখিল করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর লিয়াকত আলী বাদল দৈনিক সংবাদে ‘রংপুরে জুলাই যোদ্ধার নামে অটোর লাইসেন্স, পাঁচ কোটি টাকার বাণিজ্যের পাঁয়তারা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এর জেরেই এই হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তদন্তের পর ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির শান্ত ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তম্ময়কে বদলি করা হয়েছে।

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

গণমাধ্যম গ্রেপ্তার

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর