কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বেড়েছে দালালের দৌরাত্ম্য
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:০০
ছবি : বাংলাদেশের খবর
সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) বিদেশগামী শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভর্তি থেকে শুরু করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ পর্যন্ত দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপুল ভোগান্তির মুখে পড়ছেন।
ইলেকট্রিক্যাল, রেডিও-টিভি সার্ভিসিং, ব্লক-বাটিক, সেলাই ও কম্পিউটারসহ নানা বিষয়ে ছয় মাস মেয়াদি কোর্সের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে দক্ষ কর্মী সরবরাহের সুযোগ সৃষ্টি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরির জন্য সার্টিফিকেট অর্জন বাধ্যতামূলক হলেও দালালদের কারণে ভোগান্তি বাড়ছে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে একঝাঁক দালাল চোখে পড়ে, যারা বিভিন্ন সেবা অর্থের বিনিময়ে প্রদান করছে। মূল ফটকের পাশের দোকানগুলোতেও দালালদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সেবা সহজে পাওয়া যাচ্ছে।
সৌদি আরবগামী কুমিল্লার জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভিসা অফিস জানিয়েছে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সার্টিফিকেট নিতে হবে। কুমিল্লা অফিসে গেলে তারা বলেন, আবেদন বাহিরে করতে হবে, খরচ ৫০ ডলার। পরে বাইরে একটি দোকানে গিয়ে আবেদন করি, সেখানে ৬০ ডলার নেওয়া হয়, সঙ্গে ট্রেনিং স্থল নিশ্চিত করতে ১ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক দালাল জানান, আমরা এই জায়গা নিয়ন্ত্রণ করি। অফিস যা করতে পারছে না, আমরা করি। মানুষ খুশি থাকে, সেবাও পায়। টাকা কিছু বেশি নিই, তাতে কী হয়েছে?
একজন বিদেশগামী শ্রমিক জানান, আবেদন ও সার্টিফিকেট বাবদ তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। দালাল ছাড়া কোনো গতি নেই। এখানে সবাই একই সূত্রে বাঁধা। দালাল ছাড়া ফেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান সহকারী মিজানুর রহমান বলেন, ‘অফিসের ভেতরে কোনো দালাল আসতে পারে না। তবে বাইরে অনেক দালাল দাঁড়িয়ে থাকে, যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না।’
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, ‘বহুবার দালালদের সতর্ক করেছি এবং সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি কমাতে কাজ করছি। কিন্তু দালালচক্র দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক হলে দালালের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলা প্রশাসক মহোদয় যদি ব্যবস্থা নেন, আমরা খুশি হব।’
- সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/এমআই

