দ্বন্দ্ব-সংঘাত ভুলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা গ্রামবাসীর

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:১৯
আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫৯

তুচ্ছ ঘটনায় হয় হামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও লুটপাট। হতে হয় আসামি। আসামি হয়ে পুরুষদের থাকতে হয় বাড়িছাড়া। বাড়িতে আতঙ্কে থাকে নারী ও শিশুরা। এ কারণে বন্ধ থাকে চাষাবাদ, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। এতে নিঃস্ব হয় মানুষ।
গ্রামে দুই পক্ষের আধিপত্য ধরে রাখার লড়াইয়ে এই দ্বন্দ্ব-সংঘাত দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের যোগিবরাট গ্রামে।
আশার কথা, দাঙ্গাপ্রবণ এই গ্রামে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হলো এক শান্তি ও সংহতি সমাবেশ। যোগিবরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিল গ্রামের বিবাদমান দুই পক্ষ। পরে রাতে গ্রামের সবাই এক নৈশভোজে মিলিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, যোগিবরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আতিয়ার রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এস এম আলামিন।
এসময় বরিশাল জেলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আল মামুন বাদশা ব্যাপারী, যোগিবরাট সালামিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি আব্দুল্লাহ, মাদ্রাসা শিক্ষক ক্বারী আক্কাস আলী, চরনারানদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রূপক কুমার মিত্র, হংকং প্রবাসী আব্দুর রউফ রনি, স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান, বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহিন মোল্যা ও জামসেদ শেখ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যেকোনো মূল্যে গ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই বর্বরতা আর চলতে পারে না। এতে গ্রামের সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবাইকে বুঝতে হবে ঝগড়াবিবাদ আর সংঘর্ষে শুধুই দুঃখ। ঐক্য-সম্প্রীতিতেই রয়েছে প্রকৃত সুখ, মানুষ হিসাবে বাঁচার সার্থকতা।
তারা আরও বলেন, মামলা-হামলায় যোগিবরাট গ্রামের মানুষ নিঃস্ব হতে চলেছে। এ কারণে গ্রামের যুবসমাজ বিবাদমান দুপক্ষের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়। দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও সংঘাত ভুলে শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ায় গ্রামটিতে এখন আনন্দ বিরাজ করছে।
রাকিবুল/এইচকে