ভারতীয় গরু আটককে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নৌকার মাঝি নিহত
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১৯
ছবি : বাংলাদেশের খবর
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী রূপনগর এলাকায় ভারতীয় গরু আটককে কেন্দ্র করে চোরাকারবারিদের সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সংঘর্ষে এক নৌকার মাঝি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিজিবির একজন সদস্যসহ অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।
বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাঙ্গালভিটা বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ১১৯০/১৫-এস এর কাছে অভিযান চালায়। এ সময় ভারতীয় গরুভর্তি একটি ট্রলার বাংলাদেশে প্রবেশ করলে টহল দল সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে।
অভিযানকালে প্রায় ১০০-১২০ জন চোরাকারবারী সংঘবদ্ধ হয়ে বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর, বল্লম ও দেশীয় অস্ত্র নিক্ষেপ করে এবং গাদা বন্দুক দিয়ে ১৫-২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পাল্টা প্রতিরোধ করে বিজিবি। এতে বিজিবির নায়েক মো. আখিরুজ্জামান গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সংঘর্ষে আরও তিনজন স্থানীয় ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে দুজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সংঘর্ষের মধ্যে চোরাকারবারীরা গরু ও ট্রলার ফেলে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি ৩৩টি ভারতীয় গরু, একটি ট্রলার ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে।
ঘটনার পর ট্রলারচালক ওমর আলী নিখোঁজ ছিলেন। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে টাঙ্গুয়ার হাওরে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে মধ্যনগর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিজিবি সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যনগর থানায় মামলা দায়ের করেছে। আটককৃত গরু, ট্রলার ও দেশীয় অস্ত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল একে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘চোরাকারবারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমাদের টহল দলের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের একজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। আমরা ৩৩টি গরু ও একটি ট্রলার জব্দ করেছি। ইতোমধ্যে থানায় মামলা হয়েছে।’
মধ্যনগর থানার ওসি মনিবুর রহমান বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মরদেহের শরীরে একটি খতের চিহ্ন রয়েছে; ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
ইমাম হোসেন/এআরএস

