ধামরাই ৫২০ কেজির অষ্টধাতুর দুর্গা প্রতিমা দর্শনার্থীদের ভিড়

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৫, ২০:১২
-68dd36d300798.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঢাকার ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী বণিকবাড়িতে এবারও দুর্গাপূজায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে অষ্টধাতুর তৈরি প্রতিমা। প্রায় ৫২০ কেজি ওজনের এই প্রতিমা দেখতে ভিড় করছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা।
বণিকবাড়িতে ব্যবহৃত এই প্রতিমার বিসর্জন দেওয়া হয় না। টানা সাত বছর ধরে একই প্রতিমাতেই পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জানা যায়, শত বছরের ঐতিহ্য বহন করে আসছে ধামরাইয়ের বণিক পরিবার। তাদের পারিবারিক ব্যবসা মূলত তামা, কাঁসা ও পিতল শিল্পকে ঘিরে। সেই ধারাবাহিকতায় সুকান্ত বণিকের উদ্যোগে ২০১৭ সালে তৈরি হয় অষ্টধাতুর প্রতিমা। এতে ব্যবহৃত হয়েছে তামা, কাঁসা, স্বর্ণ, রুপা, পারদ, দস্তা ও রাংসহ আট ধরনের ধাতু। প্রায় এক বছরের শ্রমে তৈরি এই প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুট। দুর্গার পাশাপাশি এতে রয়েছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের মূর্তিও।
অষ্টধাতুর প্রতিমার বিশেষত্ব আর বণিকবাড়ির নান্দনিক কারুকাজ দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে। পূজার পাঁচ দিন সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য বাড়িটি উন্মুক্ত থাকে। ফলে প্রতিদিন ভিড় করছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা মানুষ।
আশুলিয়ার মাধবী চক্রবর্তী পরিবার নিয়ে এসেছিলেন বণিকবাড়িতে। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই দুর্গাপূজায় এখানে আসি। পূজার পাঁচ দিন সবাই বাড়িটিতে প্রবেশ করতে পারে। ভেতরে নান্দনিক কারুকাজ, নটরাজসহ বিভিন্ন দেবদেবীর কাঁসা ও পিতলের প্রতিমা আছে। তাই এখানে এলে অন্যরকম ভালো লাগে।’
গাজীপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সুমন বলেন, ‘ধামরাইয়ের বণিকবাড়ির প্রতিমাটি একেবারেই আলাদা। এখানে দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর প্রতিমা অষ্টধাতুর তৈরি। এগুলো বিসর্জন দেওয়া হয় না, বরং স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে।’
বণিকবাড়ির প্রধান ও ধামরাই মেটাল ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী সুকান্ত বণিক বলেন, ‘আমাদের দুর্গাপূজা হচ্ছে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে। আগে রাস্তার পাশে প্যান্ডেল করে মাটির প্রতিমায় পূজা হতো। কিন্তু লোকবল কমে যাওয়ায় তা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাই আমরা বাড়ির ভেতরে পূজা শুরু করি এবং অষ্টধাতুর প্রতিমা স্থাপন করি। আমাদের পরিবার ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তামা-কাঁসার শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। হাতি, ঘোড়া ও বিগ্রহ তৈরি করি আমরা।’
মনোয়ার হোসেন রুবেল/এআরএস