চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:২৭
ছবি : সংগৃহীত
আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী থেকে শুরু হওয়া দুর্গোৎসব বিজয়া দশমীর দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে বিহিত পূজা, পুষ্পাঞ্জলি ও শান্তির জল ছিটানোর পর দেবী দুর্গাকে সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, নবমী পূজার পর দেবী মর্ত্যলোক ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যান। তাই দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতার। দর্পণ বিসর্জনের পর রীতি অনুযায়ী, নগরীর বিভিন্ন মণ্ডপে দেবীকে সিঁদুর, তেল, পান-চিনি নিবেদন করে ভক্তরা অশ্রুসজল নয়নে বিদায় জানান। বিসর্জনের মাধ্যমে আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকেন ভক্তরা।
প্রতি বছরের মতো এবারও চট্টগ্রাম নগরের প্রধান বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট, অভয়মিত্র ঘাট, পারকি সৈকত এবং স্থানীয় পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। দুপুর থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় পতেঙ্গায়। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও বিসর্জন দেখতে হাজির হন হাজারো মানুষ, যেখানে অন্যান্য ধর্মের মানুষও ভিড় করেন। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বিসর্জন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বিসর্জন কার্যক্রমের নিরাপত্তায় র্যাব, পুলিশ ও সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। বিকেলে পতেঙ্গা গিয়ে কার্যক্রম পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিসর্জন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও প্রয়োজনে রাত পর্যন্ত নিরাপত্তা থাকবে।’
এ বছর চট্টগ্রামে ১৮৭৭টি মণ্ডপে পূজা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিখিল কুমার নাথ জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে পতেঙ্গায় বিসর্জন শুরু হয়। স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিমা বিসর্জনে সহায়তা করেন। নগরীর ২৯২টি পূজামণ্ডপের মধ্যে শতাধিক প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে পতেঙ্গায়। এর বাইরে জেলার ১৬ উপজেলায় এক হাজার ৫৮৫টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শাস্ত্রমতে, এ বছর দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যে এসেছিলেন। ফিরে যাচ্ছেন দোলায় (পালকি) করে। বিশ্বাস অনুযায়ী, গজে আগমন শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল বয়ে আনে। তবে দোলায় গমন মহামারি বা অন্য কোনো বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কার ইঙ্গিত বহন করে। মহালয়ার দিন দেবীপক্ষের সূচনা হয় ২১ সেপ্টেম্বর। আগামী ৬ অক্টোবর কোজাগরী পূর্ণিমার মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটবে।
এএ


