চাঁদপুরে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁদপুর
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৪৬
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ফেসবুকে বিকৃত ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেককে গ্রামে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব কাজী জসিম জানান, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নিয়ে বিকৃত একটি ছবি শেয়ার করেন। এর ফলে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাওলানা ইলিয়াসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হঠাৎ হামলা চালায়।
এতে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মিজী, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নেছার আহম্মেদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি কামালসহ প্রায় ১০জন গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে ৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে একটি ছবি অসাবধানবশত শেয়ার হয়েছে। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন জানানোর পর আমি ডিলিট করে দেই।
তিনি আরও বলেন, আমার মোবাইলটি ঘরে থাকে, অনেক সময় বাচ্চারা ব্যবহার করে। এতে বাচ্চারাও শেয়ার করতে পারে। ঘটনা যা হয়েছে, আমি ফেসবুকে পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তারপরও শুক্রবার সকালে বসার কথা ছিল। আমার উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমা চাওয়া। কিন্তু তারা বসার আগেই আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়।
গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব বলেন, আমাদের আহতরা হলেন- ৪নং ওয়ার্ড পালিশারা গ্রামের জামায়াতের আমির হাফেজ আহমেদ, সেক্রেটারি ফয়সাল, মোহাম্মদপুর ১নং ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আনোয়ার হোসেন, ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব, জামায়াতের কর্মী শরীফ, সাদ্দাম, মনু, রাশেদ, রাজু। তারা চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরের বিষয়টি উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে। এখন দলীয় যে নির্দেশনা আসবে, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান বলেন, আমি বিষয়টি নিজে দেখেছি। যা হয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তারপরও হামলা হওয়াটা দুঃখজনক।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. এ. রহিম পাটওয়ারী বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবিকে বিকৃতভাবে মাওলানা ইলিয়াস ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এ নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে প্রায় ১৫ জন আহত হয়।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলআমিন ভূঁইয়া/এমবি

