মধ্যনগরে বেহাল সড়কে লাখো মানুষের দুর্ভোগ
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৩৫
ছবি : বাংলাদেশের খবর
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার একমাত্র প্রধান সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উত্তর-পূর্বে ভারতের সীমান্ত আর দক্ষিণে উপজেলা সদর—এর মাঝখানে বিস্তৃত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ইট-বিছানো সড়কটি বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় এখন রীতিমতো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
দুই পাশে বিস্তৃত হাওরের ঢেউ আর সাম্প্রতিক বন্যায় সড়কের বড় অংশ ভেঙে গেছে। কোথাও কোথাও পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে হাওরের গর্ভে। প্রতিদিন অসুস্থ রোগী ও প্রসূতি নারীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙাচোরা সড়ক পাড়ি দিতে হচ্ছে। অথচ এটিই মধ্যনগর, বংশীকুন্ডা উত্তর-দক্ষিণ ও চামরদানী ইউনিয়নের মানুষের উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র ভরসা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, মধ্যনগর থেকে মহিমখলা পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এলজিইডির আওতায় প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়কে ইট-বিছানো (এইচবিবি) কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণের সময় হাওরের ভাঙন ঠেকাতে ব্লকের পরিবর্তে জিও ব্যাগভর্তি বালুর বস্তা ব্যবহার করা হয়। কয়েক বছরের মধ্যে সেগুলো ভেঙে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটির প্রস্থ একসময় ২৪ ফুট ছিল। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া ও বারবার বন্যার কারণে তা ভেঙে গিয়ে অনেক জায়গায় ৫ ফুট, কোথাও ৩ ফুট প্রস্থে নেমে এসেছে। আবার কিছু অংশ পুরোপুরি হাওরে বিলীন হয়েছে।
বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজং শ্রী দশরথ চন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘এটি উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কিন্তু এখন যানবাহন চলাচলের উপযোগী নেই। ফলে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উপজেলা সদরে সেবা নিতে আসা মানেই ভোগান্তি। আমরা দ্রুত সড়কটির পুনর্নির্মাণ ও অন্তত সাময়িক সংস্কার চাই।’
চামরদানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর খসরু বলেন, ‘মধ্যনগরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে কিছু জায়গায় পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হলেও গতি খুব ধীর। সাময়িক মেরামত হলে অন্তত চারটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা কমত।’
মধ্যনগর উপজেলা এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির পুনর্নির্মাণে তিনটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্যাকেজে প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি আগামী অর্থবছরে পুরোপুরি পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তবে আপাতত কোনো বরাদ্দ না থাকায় সাময়িক সংস্কারের সুযোগ নেই।’
ইমাম হোসেন/এআরএস

