নারায়ণগঞ্জে বাউল শিল্পীর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৫৯
-68e0e1fc64a07.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পি আনিকা আক্তার অনিকা (১৯) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবার দাবি করেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্বামী হাবিবুর রহমান (২৫) তাকে হত্যা করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হাবিবুর রহমানকে আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসা থেকে অনিকার মৃতদেহ তার স্বামী হাবিবুর রহমান স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাবিবুরকে আটক করে অনিকার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত আনিকা আক্তার অনিকা মাদারীপুর জেলার মোস্তফাকুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। হাবিবুর ও অনিকা ভুইগড় এলাকায় মাস্টারের ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকতেন।
অনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, পাঁচ বছর আগে হাবিবুরকে ভালোবেসে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর হাবিবুর প্রায়ই ছোটখাট বিষয়কে কেন্দ্র করে ঝগড়া করতেন এবং পূর্বে ৪টি বিয়ে করেছিলেন। চার মাস আগে অনিকার একটি কন্যা সন্তান হয়। অনিকা সন্তানকে কোলে নিয়ে বিভিন্ন বাউল ক্লাবে গান করতেন। এরপর যে আয় আসত, তা হাবিবুর জোর করে নিতেন।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি হাবিবুর মালা নামে আরেক বাউল শিল্পিকে বিয়ে করেন। অনিকা এই বিয়ের সত্যতা জানতে চাইলে হাবিবুর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে গ্রামে চলে যান। কিছুদিন আগে তিনি অনিকাকে তালাকের প্রথম নোটিশ পাঠান। অনিকা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির কাছে নালিশ করলে হাবিবুর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে স্বর্না নামে আরেক নারী বাউলকে দিয়ে অনিকাকে হত্যার চেষ্টা করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে স্বর্না অনিকার ভাড়া বাসায় হামলা চালায়। তিনি মারধর করে অনিকার পরিহিত স্বর্ণালংকার খুলে নেন। অনিকার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নিহতের পরিবার দাবি করেছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং হাবিবুর অনিকাকে হত্যা করে তা আড়াল করার জন্য মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তারা হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
হাবিবুর রহমান জানান, ‘আমি অনিকাকে হত্যা করি নি। চাদপুর থেকে এসে তার খোঁজে ভুইগড় ফ্ল্যাটে গিয়েছিলাম। দরজায় অনেক সময় ধাক্কা দিতেই দরজা ভেঙে দেখলাম অনিকা জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলছে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তালাকের নোটিশ পাঠানো ভুয়া ছিল, তাকে ভয় দেখানোর জন্য।’
ইমতিয়াজ আহমেদ/এআরএস