শ্রমিক সুরক্ষায় নেই পর্যাপ্ত প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৩০

ছবি : সংগৃহীত
সাভারের একটি পোশাক কারখানায় তিন বছর ধরে কাজ করছেন ২৭ বছর বয়সী রানী বেগম। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় তাকে। গরমে ঘেমে একাকার হয়ে যান, দুর্ঘটনার ভয়ে ভেতরে ভেতরে আতঙ্কও থাকে। গত মাসে সহকর্মী সোমা আক্তার হাতে আঘাত পেলেও কারখানা থেকে কোনো সহায়তা পাননি। নিজের টাকায় চিকিৎসা করাতে হয়েছে।
রানী বেগম বললেন, ‘আমরা কাজ করি, কিন্তু নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। কেউ আহত হলে, আঘাত পেলে চাকরি বাঁচানোই কষ্ট হয়ে পড়ে।’
শুধু রানী বেগম নন, আশুলিয়া, সাভার আর ধামরাই অঞ্চলের একাধিক কারখানার শ্রমিকই বলছেন একই কথা। তারা জানান, কাজের পরিবেশ যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি দুর্ঘটনার সময় মালিকপক্ষের দায়সারা মনোভাব আরও ভোগান্তি বাড়ায়।
পোশাক কারখানার অপারেটর সেলিনা সুলতানা বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ি। অনেকেই হাঁপানি, চর্মরোগে ভোগে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো সুবিধা নেই। অসুস্থ হলে ছুটি নিলে বেতন কাটা যায়।’
শ্রম অধিকার কর্মী জাহানারা বেগম বলেন, ‘শ্রমিকরা তাদের আয়ের ওপর পূর্ণ অধিকার পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত কাজ করেও ন্যায্য মজুরি পান না। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণ ছাড়া তাদের জীবনমান উন্নত হবে না।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘কাজের নিরাপত্তা শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার। অথচ দেশের অনেক শিল্পে এই অধিকারই সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। স্বাস্থ্যসেবা, বীমা বা ক্ষতিপূরণ-সব ক্ষেত্রেই মালিকরা দায় এড়িয়ে যেতে চান।’
সাভারের এক পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের নিরাপত্তায় বিনিয়োগ করছি। বড় কারখানাগুলোতে সেফটি কমিটি, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এবং জরুরি দুর্ঘটনা তহবিল রয়েছে। তবে সব জায়গায় একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।’
এমএইচএস