দল দেখার দরকার নেই, একসাথে কাজ করাটা বেশি জরুরি : সারজিস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৩৩
---2025-10-05T162917-68e24984b5549.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কোনও দল দেখার দরকার নেই, একসাথে কাজ করাটাই বেশি জরুরি-এ মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে জেলার তেঁতুলিয়ায় চৌরাস্তা বাজারে ঐতিহাসিক তেতুলতলায় মসজিদ, মন্দির ও গীর্জা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অর্থ বরাদ্দের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের পঞ্চগড়ে ন্যূনতম একটা জিনিস রাখতে হবে। কোনো দল দেখার দরকার নেই-বিএনপি বলুক, জামায়াত বলুক, এনসিপি বলুক বা ইসলামি দল কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বলুক। আমাদের একসাথে কাজ করাটাই বেশি জরুরি। সবাই যদি নিজেদের জায়গা থেকে চেষ্টা করি, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াকে কাঙ্খিত জায়গায় নিয়ে যেতে পারব। তারপরই দলাদলি করা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে, বিশেষ করে পঞ্চগড়ে একটি সমস্যা হচ্ছে। ভালো কাজ হলেও কিছু লোক মনে করে, এতে তার সুনাম হবে, ক্রেডিট পাবেন। এটা হতে দেওয়া যায় না। দিনশেষে ক্ষতিটা সবার জন্যই। সরকারি অর্থ থেকে যদি কেউ এক টাকার অসদুপায় চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিপরীতে, মসজিদ, মন্দির বা গীর্জা কমিটির কেউ যদি অর্থের অপব্যবহার করে, তা পকেটে রাখার চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পঞ্চগড়ের মানুষ এটা চায় না।’
পর্যটন শিল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের মানুষ এখন কক্সবাজার এবং তেঁতুলিয়ার নাম জানে। এখানে অর্গানিক চা উৎপাদন হচ্ছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে, বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। পরিবারসহ সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করলে তারা ভালো রিভিউ দিবে। এতে একশো জনের জায়গায় এক হাজার পর্যটক আসবে। তারা হোটেলে থাকবে, দোকান থেকে কেনাকাটা করবে, খাবার খাবে, যা কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে। তাই পর্যটকদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার অপরিহার্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘তেঁতুলিয়া দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। আমরা চাই এটাকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে। ময়লা আবর্জনা থাকলে পর্যটক পছন্দ করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ লিখবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় কিন্তু পরিবেশ ভালো নয়, তখন লোকজন আসবে না। তাই পরিবেশ সুন্দর রাখা জরুরি। মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডার জন্য যদি কোনো তালিকা দরকার হয়, আপনারা আমাদের জানালে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তবে ধৈর্য্য ধরতে হবে।’
সরকারি অর্থ বরাদ্দ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পের জন্য যেকোনও প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। একশো কোটির কাজও একই প্রসেসে হয়। কোন প্রকল্প ৬ মাসে, কোনটি ১ বছরে শেষ হবে। যদি রাস্তা বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের অবস্থা খুব খারাপ হয়, আপনারা আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
পঞ্চগড়ের উন্নয়নে একসাথে কাজ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করি, পঞ্চগড়ে ন্যূনতম কোনো বিষয় রাখলে, দল দেখে কাজ করার প্রয়োজন নেই। সবাই যদি নিজের জায়গা থেকে চেষ্টা করে, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াকে কাঙ্খিত স্থানে নিয়ে আসা সম্ভব। পরে দলাদলি করা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ ভালো কাজ করে, আমরা তার সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। যারা খারাপ কাজ করবে এবং প্রমাণ থাকবে, তাদেরকে স্পষ্টভাবে ফোন করে সতর্ক করা হবে। প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভালো হলে আলহামদুলিল্লাহ। না হলে প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করব। আমরা হাত ধরাধরি করে পঞ্চগড়ের উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করব।’
এ সময় তেঁতুলিয়া উপজেলার ২০টি মসজিদ, মন্দির, গীর্জাসহ ২০টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ টাকা করে মোট ৬০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করা হয়। অর্থ উত্তোলন দুইভাবে হবে বলে জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তেঁতুলিয়া উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী হাবিবুর রহমান হাবিব, আব্দুল মতিন, সাজিদুল ইসলাম সাজিদসহ অন্যান্য নেতাকর্মী ও মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
- এসকে দোয়েল/এমআই