জাল সনদে শিক্ষকতা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আসামি আফরোজা স্থায়ী চাকরিচ্যুত, ফেরত দিতে হবে বেতন-ভাতা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩০
আফরোজা আক্তার ডিউ। ছবি : সংগৃহীত
দীর্ঘ এক বছরের যাচাই-বাছাই শেষে জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অপরাধে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার ডিউকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) কলেজের কার্যনির্বাহী সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জেলা প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আফরোজা আক্তার ডিউ দীর্ঘদিন চাকুরির সময় বেতন ও ভাতা বাবদ যে অর্থ নিয়েছেন, তা ফেরত নেওয়ার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর আফরোজা আক্তার ডিউ ও তার স্বামী রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব কুষ্টিয়া থেকে পালিয়ে যান। এই দম্পতি হত্যা মামলা এবং ছাত্র আন্দোলনের সময় একাধিক হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় প্রতারণার প্রায় ছয়টি মামলা রয়েছে।
জানা যায়, আফরোজা আক্তার ডিউ কুষ্টিয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি স্নাতক ও মাস্টার্সের জাল সনদ ব্যবহার করে দীর্ঘ এক যুগ ধরে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে কালেক্টরেট স্কুলের দুই শিক্ষকের তথ্যের ভিত্তিতে। তিনি কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকার মৃত সোহরাব হোসেনের মেয়ে এবং রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের স্ত্রী।
গত বছরের ১৪ আগস্ট আব্দুস সবুর নামের এক যুবক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করে জাল সনদ সনাক্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন।
আবেদনে উল্লেখ ছিল, আফরোজা আক্তার ডিউ দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে শিক্ষকতা করেছেন। স্কুলে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেতন ও ভাতা উত্তোলন করার বিষয়টি দীর্ঘদিন গোপন থাকলেও বর্তমানে প্রকাশিত হয়েছে।
তদন্তে জানা যায়, আফরোজা আক্তার ডিউ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর ইংরেজি বিভাগে অনার্স ভর্তি হন এবং তৃতীয় বিভাগে পাশ করেন। এরপর বেসরকারি দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্সের জাল সনদ সংগ্রহ করে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন চাকুরীতে ছিলেন।
কলেজের প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি সাহা জানিয়েছেন, কার্যনির্বাহী সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আফরোজা আক্তার ডিউকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও কলেজের সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেছেন, উনি জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছিলেন। বেতন ও ভাতা বাবদ নেওয়া অর্থ ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আকরামুজজামান আরিফ/এআরএস

