ফেনীতে নিষেধাজ্ঞায় বেকার জেলেরা, ভাতা পাবেন মাত্র ২৭৫ জন
এম. এমরান পাটোয়ারী, ফেনী
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৬
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় শুরু হয়েছে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা চলবে। এই সময় উপকূলীয় জেলেদের মাছ ধরা কার্যত বন্ধ থাকায় তাদের দিন কাটছে বেকার সময়ের মধ্যে।
সোনাগাজী উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানা যায়, প্রতিবছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে নদী ও সাগরে ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুম। মা ইলিশকে ডিম ছাড়ার নিরাপদ সময় দিতে সরকার প্রতি বছরই এই সময়ে মাছ ধরা, পরিবহন, মজুত ও বিপণন নিষিদ্ধ করে। এ আইন লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ।
উপজেলায় নিবন্ধিত দুই হাজারের বেশি জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে উপকূলীয় জেলের সংখ্যা এক হাজার, যাদের মধ্যে ২৭৫ জন ইলিশ জালে মাছ ধরেন। সকল জেলের জন্যই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য। তবে শুধুমাত্র নিবন্ধিত ইলিশ জেলেদের জন্য ৬.৮৮ মেট্রিক টন চাল প্রণোদনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনাগাজী সদর ও চরচান্দিয়া ইউনিয়নের জলদাসপাড়া জেলে পল্লীতে নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জাম নদীর তীরে রাখা রয়েছে। জেলেরা জানিয়েছেন, বছরে তিনবার এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকে। এ সময় বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাব থাকায় তাদের দিন কাটছে দুশ্চিন্তাপূর্ণ।
স্থানীয় জেলে হরিপদ জলদাস বলেন, ‘নদী ও সাগরের মোহনা থেকে মাছ ধরে বিক্রি করেই সংসার চলে। এখন ২২ দিন আয়ের পথ বন্ধ। আমি কোনো সরকারি সহায়তা পাই না, কারণ আমি শুধুমাত্র ইলিশ জালের জন্য তালিকাভুক্ত নই।’
ইলিশ জাল ব্যবহারকারী জেলে জয়দেব জানান, নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন নদীতে নামতে পারবে না। শীত মৌসুমে ইলিশ পাওয়া যাবে না। তিনি দাবি করেন, জেলে পেশার পাশাপাশি জেলে পাড়ায় ভিন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হোক।
সোনাগাজী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাছলিমা আকতার বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার আগে সচেতনতা তৈরির জন্য লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হয়েছে। নিয়মিত টহল চলছে। খাদ্য সহায়তা সকল জেলে পাবেন না, বরং শুধুমাত্র নিবন্ধিত ইলিশ জেলেদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।’
এআরএস

