পুত্র সন্তানের মুখ আর দেখা হলো না ফায়ারফাইটার নুরুল হুদার

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২১

ছবি : বাংলাদেশের খবর
ফায়ারফাইটার মো. নুরুল হুদার পরিবারে এসেছে নতুন আলো—এক পুত্র সন্তান। কিন্তু এই সন্তানের মুখ আর দেখা হলো না নুরুল হুদার। টঙ্গীর কেমিক্যাল গোডাউনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন তিনি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। হাসপাতালের কক্ষে তখন একসাথে কান্না ও নীরবতা— একদিকে নতুন জীবনের আগমন, অন্যদিকে এক অপূরণীয় শূন্যতার ভার। কারণ, যে বাবার জন্য সবাই গর্বিত, সেই বাবা এখন পৃথিবীতে নেই।
গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে টঙ্গীর সাহারা মার্কেট এলাকার একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছিলেন ফায়ারফাইটার নুরুল হুদা। কিন্তু সেদিন আর ফেরা হয়নি তার। দগ্ধ অবস্থায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় নুরুল হুদাকে। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ২টা ৪০ মিনিটে মারা যান এ অগ্নিযোদ্ধা।
নুরুল হুদার সহকর্মীরা বলছেন, ‘হুদা ভাই সবসময় প্রথমে দৌড়ে যেতেন আগুনের সামনে, ভয় পেতেন না কিছুতেই। শেষ দিনটিতেও ঠিক তাই করেছেন।’
এদিকে তার রেখে যাওয়া পরিবারে এখন তিন সন্তান— ১০ বছরের এক কন্যা, ৩ বছরের এক পুত্র এবং সদ্যোজাত নবজাতক। তাদের বিসয়ে নুরুল হুদার সহযোদ্ধারা বলছেন, ‘এই শিশুটিই এখন আমাদের জন্য এক প্রতীক— ত্যাগ, সাহস আর দায়িত্ববোধের প্রতীক। হয়তো বাবাকে পাবে না, কিন্তু দেশ তাকে চিরকাল স্মরণে রাখবে।’
উল্লেখ্য, নুরুল হুদা ১৯৮৭ সালের ২১ জুলাই ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ধামাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন তিনি। তার সহকর্মী সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বে নিষ্ঠা, সাহস এবং মানবিকতার সঙ্গে নুরুল হুদার কাজ করেছেন।
এনএমএম/এএ