Logo

সারাদেশ

উপদেষ্টার আগমনকে ঘিরে অস্থায়ী সংস্কার, মহাসড়কে দুর্ভোগ

Icon

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৫৬

উপদেষ্টার আগমনকে ঘিরে অস্থায়ী সংস্কার, মহাসড়কে দুর্ভোগ

ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের বিশ্বরোড গোলচত্বর সংলগ্ন তিন দিকের রাস্তার অবস্থা এখন চরম বেহাল। বছরের পর বছর ধরে খানাখন্দে ভরে আছে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কোথাও পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের সারি। এমন অবস্থায় এখন যেকোনো সময় ট্রাক, লরি কিংবা যাত্রীবাহী বাস উল্টে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা—এমন আশঙ্কায় প্রতিদিনই আতঙ্কে থাকেন যাত্রী ও পথচারীরা।

মহাসড়কের যানজট নিয়ে নিয়মিত সংবাদপত্রের শিরোনাম হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহুবার এই রাস্তার দুরবস্থার ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, হয়েছে নানা প্রতিবাদ ও আন্দোলনের ডাকও। তবুও সড়ক বিভাগের টনক নড়েনি। ফলে, দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র। একবার যান চলাচল বন্ধ হলে, তা স্বাভাবিক হতে লেগে যায় এক থেকে দুই দিন। 

দুঃখের বিষয় হলো—দীর্ঘদিনের অবহেলা শেষে হঠাৎ করে গতকাল থেকে রাস্তার গর্ত ভরাটের কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। জানা গেছে আগামী ৮ অক্টোবর রোজ বুধবার  ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপদেষ্টা— মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। অভিযোগ উঠেছে উপদেষ্ঠাকে দেখানোর জন্যই এই তড়িঘড়ি কাজ শুরু করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলছে। তোড়জোড় করে চলছে মহাসড়ক মেরামতের কাজ। হঠাৎ গতি ফিরেছে চারলেন প্রকল্পের অন্যান্য কাজের। উপদেষ্টাকে দেখাতে খানাখন্দ মেরামত কাজ দ্রুত করতে সড়কের পাশে নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে যানজট তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে এই মহাসড়কের সরাইল অংশে।

তবে সচেতন মহল বলছেন, এর আগেও ঠিক এমনভাবে ‘দেখানোর জন্য’ কাজ হয়েছে। সামান্য গর্ত ভরাটের নামে টাকা খরচ হয়, কিন্তু কয়েক দিন পরেই আবার রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এবারও যেন সেই পুরোনো চিত্রের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

স্থানীয় পরিবহন চালক আনিস মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তা এমন খারাপ যে গাড়ি চালানোই যায় না। ব্রেক দিলে চাকা গর্তে পড়ে, গতি বাড়ালে ধাক্কা খেয়ে মানুষ পড়ে যায়। প্রতিদিন দুর্ঘটনার ভয় নিয়ে চলি।

সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বলেন, রাস্তার মেরামতের যে টাকা খরচ করা হচ্ছে তা শুধু উপদেষ্টাকে দেখানোর জন্যই এ টাকা খরচ করা হচ্ছে তাতে জনগণ সামন্যতম উপকার হবে না।

এ বিষয়ে সরাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা মোশারফ হোসেন বলেন, সড়ক বিভাগের এ কাজটিই এফকন করতেছে। এ বিষয়ে যে ইন্জিনিয়ার আছে তার সাথে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ আখাউড়া চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, উপদেষ্টা মহোদয় আসবেন বলে শুনতে পেয়েছি। কিন্তু আমরা এখনো অফিশিয়ালি কোনো সূচি পাইনি। মহাসড়ক নির্মাণে যে জটিলতা ছিল তা কেটে গেছে। আমরা নতুন করে আরও ১৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। দুই তিন দিনের মধ্যে কাজের গতি পুরোদমে শুরু হবে। 

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন রাজধানী ও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাজারো মানুষ চলাচল করে। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কের রক্ষণাবেক্ষণে সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এই উদাসীনতা জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

লিটন হোসাইন জিহাদ/আইএইচ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর