পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল, রাজার সনদ বাতিল ও সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপনসহ ৮ দফা দাবিতে আগামী সোমবার (১৩ অক্টোবর) বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ (পিসিএনপি)।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে বান্দরবানের হোটেল গ্র্যান্ডভ্যালির সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা বাঙালি সম্প্রদায় যুগের পর যুগ ধরে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। তাই আমাদের সাংবিধানিক ও ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৮ দফা দাবিতে আগামী ১৩ অক্টোবর সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল আহ্বান করছি। 

তবে কলেজ, সরকারি অফিস-আদালত, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি, চলাফেরা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ সরবরাহের গাড়ি ও পরীক্ষার্থীদের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ রচিত প্রহসনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করে ৬১ জেলার ন্যায় সংবিধানের আলোকে তিন পার্বত্য জেলার শাসন ব্যবস্থা চালু করা। জমি ক্রয়-বিক্রয়, চাকরি, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে রাজার সনদ বাতিল করা। ৬১ জেলার ন্যায় রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু করা। বাজার ফান্ড প্লটের লিজের মেয়াদ ৯৯ বছরে উন্নীত করা ও বন্ধ রাখা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা। উন্নয়নের স্বার্থে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পরিবেশবান্ধব ইটের ভাটাসহ কলকারখানা ও ইন্ডাস্ট্রি চালু করা। 

আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তিন পার্বত্য জেলায় প্রত্যাহারকৃত ২৪৬টি সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করা। এছাড়াও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণ বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে তিন পার্বত্য জেলায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, চাকরি সহ সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সমান অধিকার প্রদান ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে।

এ দাবি মেনে না নেওয়ায় প্রাথমিকভাবে শুধু মাত্র বান্দরবানে হরতালের আহ্বান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে। এমনকি আগামিতে তিন পার্বত্য জেলায় হরতালের আহ্বানের পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ সময় অন্যদের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ বান্দরবানের সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. শাহ জালাল ও জেলায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সোহেল কান্তি নাথ/এমবি