Logo

সারাদেশ

লাভে বাড়ছে বস্তায় আদা চাষ

Icon

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:২৬

লাভে বাড়ছে বস্তায় আদা চাষ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

নীলফামারীতে পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষ করে বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন কৃষকরা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় জেলার ছয়টি উপজেলায় এ পদ্ধতির চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, অল্প জায়গায় স্বল্প খরচে বেশি আয় সম্ভব হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষের প্রবণতা বাড়ছে। ঔষধি গুণসম্পন্ন ও মসলা জাতীয় ফসল হিসেবে আদার দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অনেকেই বাড়ির ছাদ, উঠান, পুকুরের পাড়, রাস্তার ধারে কিংবা ভাড়াকৃত জমিতে বস্তায় আদা চাষ করছেন।

এবার জেলায় মোট ৩ লাখ ৫১ হাজার ২৪০ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ৯২ হাজার, ডোমারে ৬২ হাজার, ডিমলায় ৬০ হাজার, কিশোরগঞ্জে ৫৪ হাজার, জলঢাকায় ৬৮ হাজার এবং সৈয়দপুরে ৩২ হাজার বস্তায় চাষ করা হয়েছে।

সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের কৃষক কবির হোসেন বলেন, ‘বাড়ির পাশে দেড় বিঘা পতিত জমিতে ৪০০ বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৬০-৬৫ টাকা খরচের বিপরীতে প্রায় ৮০০ কেজি (২০ মণ) আদা উৎপাদন হবে। বাজারে প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলে খরচ বাদে প্রায় এক লাখ ৭৪ হাজার টাকা লাভ হবে।’

একই উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের কৃষক বাদশা মিয়া জানান, ‘বাড়ির পাশে উঁচু জমিতে ৩০০ বস্তায় আদা চাষ করেছি। কৃষি অফিসের সহায়তায় নিয়মিত পরিচর্যা করছি। দু’মাসের মধ্যেই ফসল তুলতে পারব। আশা করছি, এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে।’

ডোমার উপজেলার ছোট রাউতা গ্রামের কৃষক রহিম মিয়া বলেন, ‘গত বছর তিন হাজার বস্তায় আদা চাষ করে খরচ বাদে আড়াই লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। এবার সাড়ে তিন হাজার বস্তায় চাষ করেছি। লাভের টাকায় পরিবারের সব চাহিদা মেটাতে পারব।’

একই গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এবার ১৭ শতাংশ জমিতে দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় গড়ে দেড় কেজি ধরে প্রায় ২ হাজার ২৫০ কেজি (৫৬ মণ) আদা হবে। বাজারদর ২৫০ টাকা কেজি হলে বিক্রয়মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা। খরচ পড়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা, লাভ হবে প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ বলেন, ‘বন্যা, খরা ও কন্দপচা রোগের কারণে মাটিতে আদা চাষে কৃষকরা লোকসান গুনছিলেন। এখন বস্তায় চাষে ঝুঁকি কম এবং ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা নতুন করে আগ্রহী হচ্ছেন। এবার সদরে ৯২ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনজুর রহমান বলেন, ‘মাটিতে রোপিত আদার তুলনায় বস্তায় আদা চাষ অনেক বেশি লাভজনক। এ কারণে কৃষকরা ক্রমেই এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা তাদের সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন।’

তৈয়ব আলী সরকার/এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর