চাঁদপুরে কালভার্ট নির্মাণ না করেই অর্ধকোটি টাকা লোপাট

আলআমিন ভূঁইয়া, চাঁদপুর
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২০:২৯
-68ebbb4ab0bdd.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে গ্রামীণ রাস্তার ১৫ মিটার পর্যন্ত কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কালভার্ট নির্মাণ না করেই অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করেছে ঠিকাদার। এই ঘটনার সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার একটি বছর অতিবাহিত হলেও লোপাটকৃত অর্থ এখনও ঠিকাদারের পকেটে রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের রাগৈ গ্রামে তপাদার বাড়ি খালপাড়া এলাকায় ১৫ মিটার পর্যন্ত কালভার্ট নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৮ লাখ ৭৪ হাজার ১৭১ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঠিকাদার তাজুল ইসলাম সুমন এই কাজের জন্য নিয়োগ পান।
কিন্তু কাজ শুরুর সময়ে খালে পানি থাকায় নির্মাণ শুরু করতে পারেননি। এরপরও ২০২৫ সালের মে মাসে বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেক, অর্থাৎ ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।
উন্নয়ন কাজের অগ্রগতির চিঠি থেকে জানা যায়, ২৯ মে ২০২৫-এ তৎকালীন শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সবুজের স্বাক্ষর ও সীল রয়েছে। এই কর্মকর্তা দু’জন বর্তমানে অন্য জেলায় বদলি হয়েছেন।
বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন নিশ্চিত করেছেন, কাজ না করেই ঠিকাদার উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় অর্থ উত্তোলন করেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ঠিকাদার কাজ না করেও প্রকল্পের অর্থ উত্তোলন করেছেন। আবু সাঈদ বলেন, ‘ঠিকাদার কাজ করেনি। বিষয়টি প্রকাশিত হলে কিছু পাথর রেখেছেন।’
মজিবুর রহমান বলেন, ‘গেল বছর কাজ শুরু হওয়ার আগে ঠিকাদার চলে গেছে। তিনি টাকা উত্তোলন করেছেন। এই কালভার্ট নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এটি নির্মাণ হলে হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে।’
খালের দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দা সালেহা বেগম ও মরিয়মেন্নেছা জানান, ‘কালভার্ট নির্মাণ হলে যাতায়াত অনেক সহজ হবে।’
ঠিকাদার তাজুল ইসলাম সুমন মুঠোফোনে বলেন, ‘পানির কারণে কাজ শুরু করতে পারিনি। কাজ না করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে পিআইও-এর সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন বলেন, ‘রাগৈ গ্রামে কালভার্টের কাজ না করেই অর্থ লোপাট হয়েছে এমন অভিযোগ তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে স্থানটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘তদন্তে প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্মাণ না হওয়া কালভার্টের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।’
এআরএস