-68ebc39ba192b.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার রশিদপুর গ্রামের তরুণ কৃষক ইমরান হোসাইন যেন এক ভিন্ন গল্পের নায়ক। তার কাছে কৃষি শুধুই জীবিকার মাধ্যম নয়, এটি ভালোবাসা ও দেশপ্রেমের এক শিল্প।
তাই তিনি নিজের ধানের জমিতে আঁকেছেন জাতীয় পতাকার প্রতিরূপ। সবুজ মাঠে লাল সূর্যের প্রতীক ফুটিয়ে তুলেছেন তার নিপুণ কৃষিশিল্পে। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, পতাকাটি যেন বাতাসে উড়ছে—কিন্তু এটি কাপড় নয়, ধান গাছের শীষে আঁকা এক জীবন্ত পতাকা।
প্রায় ৪৫ শতক জমিতে দুই জাতের ধান চাষ করে ইমরান এই অনন্য ক্ষেত তৈরি করেছেন। সবুজ অংশে ব্যবহার করেছেন পাকিস্তানি লং বাসমতী ধান, আর লাল সূর্যের অংশে রোপণ করেছেন বেগুনি রঙের পারপোল রাইস। তার এই উদ্যোগের মূল অনুপ্রেরণা দেশপ্রেম।
ইমরান হোসাইন বলেন, ‘দেশকে ভালোবাসা শুধু মুখের কথা নয়, কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পেলে তা হৃদয়ে পৌঁছে যায়। এই জমি আমার কাছে শুধুই ফসলের নয়, এটি আমার মাতৃভূমির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক।’
ইমরানের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এখন রশিদপুর গ্রামের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিদিনই দর্শনার্থীর ভিড় জমছে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, আবার কেউ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার এই সৃজনশীল প্রচেষ্টা। এতে এলাকায় তৈরি হয়েছে এক ইতিবাচক পরিবেশ, যেখানে কৃষি শুধুই জীবিকার মাধ্যম নয়, সৃজনশীলতারও প্রকাশ।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম রাফিউল ইসলাম বলেন, ‘ইমরানের এই কাজ দেশপ্রেমের পাশাপাশি কৃষি উদ্ভাবনেরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এমন উদ্যোগ তরুণ প্রজন্মকে কৃষির প্রতি আগ্রহী করবে এবং দেশপ্রেমের মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেবে মাঠে, সমাজে ও মানুষের মনে।’
দেশপ্রেম, সৃজনশীলতা আর কৃষির এক অপূর্ব সমন্বয়ে ইমরান হোসাইন দেখিয়েছেন, ভালোবাসা প্রকাশের ভাষা শুধু কবিতা বা গানে নয়—ধানের শীষেও ফুটে উঠতে পারে এক পতাকার গল্প, এক মাতৃভূমির শ্রদ্ধাঞ্জলি।
এআরএস