Logo

সারাদেশ

বগুড়ায় যাত্রীবাহী বাসে ধর্ষণের ঘটনায় নতুন মোড়, পুলিশ বলছে শ্লীলতাহানির চেষ্টা

Icon

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:০৫

বগুড়ায় যাত্রীবাহী বাসে ধর্ষণের ঘটনায় নতুন মোড়, পুলিশ বলছে শ্লীলতাহানির চেষ্টা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বগুড়ার শাজাহাপুর থানা এলাকায় বাসের ভেতর দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। এ ঘটনায় ‘আর কে ট্রাভেলস’র চালক সাকিব হাসানকে (২৮) আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাতেই অভিযুক্ত চালককে ঢাকা যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা এলাকা থেকে আটক করে হাইওয়ে পুলিশ। পরে রাতেই ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে বগুড়ায় নিয়ে আসেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জনান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সিরাজগঞ্জ কড্ডার মোড় হতে তার বন্ধুর সাথে বগুড়া শহরের উদ্দেশ্যে আর, কে ট্রাভেলস বাসে আসার পথে শাজাহানপুর এলাকায় চলন্ত বাস থেকে যাত্রী ও সুপারভাইজার নেমে যায়। পরে বাস থাকা ওই শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুকে নিয়ে বাস চালক বনানী এলাকায় বাস থামিয়ে ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুকে নেমে দিয়ে বাসের হেলপারের সহযোগিতায় চালক ওই শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত চালক সাকিব হাসান আটক হয়েছে।

ওই শিক্ষার্থী তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সত্যতা মুঠোফোনে জানানোর বিষয় জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান জানান, ভিকটিম এজাহারে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা যেভাবে দেবে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। যদি এজাহারে ধর্ষণের বর্ণনা আসে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ঘটনার পর বগুড়া গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ডিবি) ওসি ইকবাল বাহার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত চালকসহ জড়িতদের আটক এবং ভিকটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। পরে বিষয়টি নিয়ে মোটর শ্রমিকের সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান সামছুর সহযোগিতা নিতে দেখা যায়। বগুড়া ডিবি কার্যালয়ে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের গাড়িতে করে ভিকটিমকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান সামছু।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা এই ধরনের কোনো তথ্য পাইনি, পুলিশ ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি পরিচিতদের সাথে ডিবি কার্যালয়ে আসেন এবং আসামির লোকেশন জানার পর টাঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে আটক করা হয়েছে।

বাসের চালক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া মোটর শ্রমিকের সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান সামছু বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছি। আমরা এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দ্রুত বিচারে দাবি জানাচ্ছি।’

অভিযুক্তকে আটক ও ভিকটিমকে উদ্ধারে পুলিশকে সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে সামছুজ্জামান সামছু বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে ডিবির ওসি আমাকে মোবাইল ফোনে জানালে বিষয়টি আমি জানতে পারি। চালক এবং ওই শিক্ষার্থী কোথায় আছে পুলিশ জানতে চাইলে আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি। ভিকটিমকে উদ্ধার বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে আমি তখন তাকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়ে আসি।

ঘটনাটি শাহজাহানপুর থানা এলাকায় হওয়ায় ভিকটিমকে গতরাতেই ডিবি হেফাজত থেকে শাজাহানপুর থানা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটির বিষয়ে ভিকটিমের পরিবারকে জানানো হয়েছে কিনা এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলামকে জানান, ওই শিক্ষার্থীকে শাজাহানপুর থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হলে পরিবারের পক্ষ থেকে তার ভগ্নিপতি থানায় এসেছে মামলার বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে।

এ দিকে ঘটনাসূত্রে সরেজমিনে জানা গেছে, সোমবার আর কে ট্রাভেলস’ এর একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব ২৭৩১) বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দুপুরে বাসটি বগুড়া শহরতলীর বনানী মোড়ে পৌঁছালে অধিকাংশ যাত্রী নেমে যায়। কিন্তু চালক ও হেলপার কৌশলে ওই কিশোর-কিশোরীকে নামতে না দিয়ে বাসটি পর্যটন মোটেলের পাশে একটি মোটর গ্যারেজে নিয়ে যায়। সেখানে হেলপার প্রেমিক কিশোরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে দেয়। এরপর চালক রাকিব বাসের ভেতর কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

পরে ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার প্রেমিক ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনালে ফিরে এলে মেয়েটির কান্না দেখে কয়েকজন শ্রমিক ঘটনাটি জানতে পারেন। তবে কিছু পরিবহন শ্রমিক নেতা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মীমাংসার নামে কিশোরী ও তার প্রেমিককে ঢাকাগামী আরেকটি বাসে তুলে দেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

  • জুয়েল হাসান/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ধর্ষণ মামলা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর