Logo

সারাদেশ

চট্টগ্রামে ইপিজেডের আগুন ছড়াচ্ছে পাশের ভবনেও

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদকডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৫৫

চট্টগ্রামে ইপিজেডের আগুন ছড়াচ্ছে পাশের ভবনেও

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) ‘অ্যাডামস ক্যাপ’ নামের একটি টেক্সটাইল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নয়তলা ভবনের উপরের দিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

বিকেল গড়িয়ে রাত হলেও আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আগুনের তীব্রতা, ঘটছে একের পর এক বিস্ফোরণ।

দাহ্য পদার্থে ভর্তি ওই ভবনটিতে তৈরি হতো তোয়ালে, ক্যাপ ও হাসপাতাল ব্যবহারের পিপি মেডিকেল গাউন। এরই মধ্যে আগুনের তাপে ভবনের দেয়াল ও কয়েকটি ফ্লোর ধসে পড়েছে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে পুরো শিল্প এলাকা, আশপাশের ভবনেও দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

সিইপিজেড কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক আশেক মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, অ্যাডামস ক্যাপ কারখানায় ১,০৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ম বাজলে সবাই দ্রুত ভবন থেকে বের হয়ে আসেন। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

তবে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশের খবরকে মুঠোফোনে জানান, ২৫ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভবনের ভেতরে থাকা দাহ্য পদার্থের কারণে উদ্ধার কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটছে, তবুও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ২৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। 

ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন। মোট ২০টিরও বেশি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ভবনের ভেতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ—টিস্যু জাতীয় রোল, রাসায়নিক ও গুদামজাত কাপড়-থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা সিইপিজেডের অভ্যন্তরীণ পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে নেভানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু তীব্র তাপ ও ধোঁয়ায় কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকরা জানান, ভবনের উপরের দুটি তলা ও অংশবিশেষ দেয়াল ভেঙে পড়েছে। মাঝে মাঝে ভেতর থেকে তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। আগুনের শিখা ১০০ ফুট ওপরে উঠে ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যাচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৩০০ গজ দূরেও আগুনের তাপ স্পষ্ট অনুভূত হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখার কর্মকর্তারা বাংলাদেশের খবরকে জানান, আগুনের উৎস এখনও শনাক্ত করা যায়নি। যদিও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে আশপাশে থাকা অন্যান্য কারখানা ও ভবন রক্ষায় তাদের ইউনিটগুলো এখন চারপাশে অবস্থান নিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশের সদস্যরা জনতার ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। আগুন লাগা ভবন থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সব শ্রমিককে, তবে গুদামে থাকা কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা পাশের ভবনগুলো রক্ষায় ওয়াটার গান দিয়ে আগুনের দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। আগুন যেন আশপাশের টেক্সটাইল কারখানায় না ছড়িয়ে পড়ে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

কারখানার শ্রমিকরা বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সবাই দৌড়ে নিচে নেমে আসে। আমরা শুধু বাঁচতে পেরেছি, কিন্তু পুরো কারখানাটা শেষ হয়ে গেছে।

  • এনএমএম/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

অগ্নিকাণ্ড

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর