ফেসবুক লাইভে মাদ্রাসা সুপারের আর্তনাদ, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি
আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৩২
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের চরখোলাবাড়িয়া গ্রামে মধুমতী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। ইতিমধ্যে একটি মসজিদসহ বহু বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এখন ভাঙনের মুখে রয়েছে এনডিসি আল হেরা দাখিল মাদ্রাসা, সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধিত এতিমখানা, দিগনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরখোলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একজন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আল্লাহর কাছে হাত তুলে মোনাজাত করছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে নদী ভাঙনের হাত থেকে মাদ্রাসা ও মসজিদ বাঁচানোর করুণ আর্তনাদ করছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আল হেরা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রব ফেসবুক লাইভে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
লাইভে তিনি বলেন, ‘এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সানোয়ার হোসেন সবসময় বলতেন-সাহায্য করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই আমাদের এমপিও হয়, কোনো প্রকার টাকা-পয়সা লাগে নাই। এটি নবীর ঘর। আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি, তাঁরা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু নদী ভাঙনের তীব্রতা এতটাই বেড়েছে যে, যদি এখনই জিও ব্যাগ ডাম্পিং না করা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকবে না। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করা হোক।’
লাইভের পুরো সময়জুড়ে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নদীগর্ভে বিলীন না হয়।
স্থানীয়রা জানান, আল হেরা দাখিল মাদ্রাসার নামে নতুন একটি ভবনের টেন্ডার ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যদি পুরো প্রতিষ্ঠানটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়, সরকারের নতুন এই অবকাঠামোগত বিনিয়োগও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।
বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক বছরে তিনবার নদীতে গেছে। এখন কোনো মতে টিকে আছি। যে অবস্থায় নদী আছে, তাতে যে কোনো সময় মাদ্রাসা, এতিমখানা আর বিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, ‘স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে- জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের প্রস্তুতি চলছে।’
- মিয়া রাকিবুল/এমআই

