ঠাকুরগাঁওয়ে বাঁধে মাছ ধরার উৎসবে এসে হতাশ শিকারিরা
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৫৭
ছবি : বাংলাদেশের খবর
প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের শুক নদীর তীর বুড়ির বাঁধে শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব। বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় আশেপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।
তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিকারিরা। একই সঙ্গে কারেন্ট জাল ও রিং জাল ব্যবহারের কারণে বিপদের মুখে পড়েছেন তারা।
সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাতে জাল নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে পানিতে নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ। কেউ ভেলায়, কেউ ছোট নৌকায় মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। দৃশ্যটি ঠাকুরগাঁও বুড়ির বাঁধ এলাকায় চোখে পড়ার মতো।
গত শুক্রবার বিকেলে বাঁধের পানি ছাড়ার পর থেকে জেলেদের আগমন শুরু হয়েছে। উৎসবটি চলবে শনিবার দিনব্যাপী। এতে নারী, পুরুষ ও শিশুরা মাছ ধরতে ব্যস্ত। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই, তারা খালি হাতে কাদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন। অনেকে আবার ভিড় জমিয়ে মাছ ধরা দেখছেন। মাছ উৎসবকে ঘিরে বাঁধ এলাকায় বসানো হয়েছে বিভিন্ন খাবারের দোকান।
-68f36452e049a.jpg)
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালে শুক্র মৌসুমে এই অঞ্চলের কৃষিজমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট (সুইসগেট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়ানো হয়। এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ।
৫০ একর এলাকায় সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধটি মৎস্য অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত। সারা বছর এখানে কেউ মাছ ধরতে পারেন না। শুধু জমানো পানি ছাড়ার সময়ই মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি থেকে আসা আসলাম, রনি ও ফারুক বলেন, প্রতিবারই এখানে মাছ ধরতে আসি আমরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক মানুষ এখানে আসেন। সবাই মিলে মাছ ধরতে খুব ভালো লাগে। এটি আজকের দিনে একটি মেলায় পরিণত হয়েছে। তবে এবারে নদীতে মাছ কম। গতকাল রাত থেকে জাল ফেলে ১-২ কেজি মাছ পেয়েছি। রিং জাল ব্যবহারের কারণে আমরা যারা ফিকা জাল ব্যবহার করি, তাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।
বোদা উপজেলার খগেন বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা থেকে জাল দিয়ে মাছ ধরছি। কিন্তু খুব বেশি মাছ ধরতে পারিনি। গতবার অনেক মাছ পেয়েছিলাম, এবারে তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। রিং জাল ব্যবহারের কারণে মাছের সংখ্যা কম।’
অপরদিকে মাছ কিনতে আসা ওমর, রিপন ও আল আমীন জানান, বাজারের তুলনায় এখানে এবারে মাছের দাম অনেক বেশি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, নদীর মাছ না হয়ে বাইরে থেকে আনা মাছ এখানে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী যাকারিয়া বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাছের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
- আবু সালেহ/এমআই


