Logo

সারাদেশ

কুমিল্লায় সনদ জালিয়াতির দায়ে কলেজ সভাপতির অপসারণ

Icon

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৪৮

কুমিল্লায় সনদ জালিয়াতির দায়ে কলেজ সভাপতির অপসারণ

সাবিনা আফরোজ। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ভুয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ব্যবহার করে সিদলাই আমীর হোসেন জোবেদা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে থাকা সাবিনা আফরোজকে অপসারণ করা হয়েছে।

গত ১৬ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকারের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

সাবিনা আফরোজ অত্র কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম অ্যাডভোকেট আমীর হোসেনের ছেলে জিয়াউল হাসান মাহমুদের স্ত্রী।

সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগে সাবিনা আফরোজকে সিদলাই আমীর হোসেন জোবেদা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী কলেজের সভাপতি হওয়ার জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হওয়া আবশ্যক। কিন্তু তিনি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের “মাস্টার অফ আর্টস ইন ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড দাওয়াহ” সনদ দেখিয়ে নিজেকে স্নাতকোত্তর দাবি করেন।

পরবর্তীতে সনদ যাচাইয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওসমান গণীর স্বাক্ষরিত ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখের এক চিঠিতে জানানো হয়, সাবিনা আফরোজের (রোল: ০১৯, রেজিস্ট্রেশন: ২০০৯১১২০১৯, সেশন: ২০১১) উক্ত সনদটি অবৈধ, এবং তাদের অনুমোদিত স্থায়ী ক্যাম্পাসের কোনো রেকর্ড বা ওয়েবসাইটে এর তথ্য নেই।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় ১৬ অক্টোবর তারিখে তাকে গভর্নিং বডির সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। একই সঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষকে নতুন সভাপতি নিয়োগের লক্ষ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তিনজনের নাম প্রস্তাবের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ থেকে আমাকে একটি লিখিত চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে সাবিনা আফরোজের সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয় এবং নতুন তিনজন স্নাতকোত্তর ব্যক্তির নাম প্রস্তাবের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল করিম বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো লিখিত চিঠি হাতে পাইনি।’

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, ‘আমি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে নিয়ম অনুযায়ী কলেজের কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছিলাম। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাচাইয়ে যা পাওয়া গেছে, সেটি সম্পূর্ণ সত্য ও প্রমাণিত। প্রশাসন সব সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা বজায় রাখার পক্ষে।’

এ বিষয়ে সাবিনা আফরোজের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর (রাষ্ট্রপতি) কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সনদ জালিয়াতির স্থান নেই। আমীর হোসেন জোবেদা ডিগ্রি কলেজের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৎ ও যোগ্য শিক্ষানুরাগীদের মাধ্যমেই নতুন সভাপতি নিয়োগ দেওয়া হবে।’

  • সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/এমআই
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর