শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের লংগরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কোলে জন্ম নিয়েছে একটি নবজাতক কন্যা শিশু।

পরে অসুস্থ ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ শিশুটিকে দত্তক নিতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

মানসিক ভারসাম্যহীন নারী সাবানা দীর্ঘদিন ধরে শ্রীবরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তাকে বিভিন্ন সময় রাতে লংগরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে ঘুমাতে দেখা গেছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হঠাৎ স্কুলের পরিত্যক্ত ভবন থেকে নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে এলাকাবাসী ছুটে যান। 

পরে তারা দেখতে পান, ওই নারীর কোলে জন্ম নিয়েছে একটি কন্যা শিশু। স্থানীয়রা দ্রুত মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান এবং তাদের খাবার ও প্রাথমিক সেবা দেন। শিশুটি সুস্থ থাকলেও মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে অসহায় নবজাতককে দত্তক নিতে অনেকেই এগিয়ে এসেছে। বলতে গেলে প্রতিযোগিতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে কেউ ওই নারীর পরিচয় জানেন না। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন ও আলোচনা শুরু হয়েছে।

শ্রীবরদী সমাজসেবা অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি পাঠিয়েছি, হাসপাতালে সমাজসেবা শাখা রয়েছে। তারাই চিকিৎসা সহায়তা দেবে। এরপর নবজাতক ও ওই নারীর পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শ্রীবরদী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিব-উল-আহসান বলেন, ‘মা ও নবজাতকের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হবে। এছাড়াও ওই নারীর ঠিকানা সম্পর্কে খোঁজ নিতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে।’

এ বিষয়ে শেরপুর জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. তানভির আহমেদ বলেন, ‘নবজাতক ভালো আছে। তবে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার অবস্থার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তার চিকিৎসা চলছে।’

• শাহরিয়ার শাকির/এমআই