ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদের গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন একজন। হামলাকারীরা তার গাড়িবহরের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফের পক্ষে স্লোগান দিয়ে এ হামলা চালানো হয়।

রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেলে ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে বিকেল ৪টার দিকে এ কে আজাদ পরমানন্দপুর বাজারে যান। প্রথমে তিনি বাজারসংলগ্ন জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বাজার এলাকায় গণসংযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, এমন সময় স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণসংযোগের সময় সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি নান্নু মোল্লার নেতৃত্বে একটি মিছিল ঘটনাস্থলে আসে। মিছিলকারীরা এ কে আজাদকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। যুবদলের নেতাকর্মীরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়ে এ কে আজাদকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করেন। এ সময় তারা নায়াব ইউসুফের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, ওই সময় এ কে আজাদের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ঘিরে রাখেন। পরে পুলিশ এসে যুবদল নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। যুবদলের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডাও হয়। পরে পুলিশের অনুরোধে এ কে আজাদ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ কে আজাদের গাড়িবহর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় শেষের গাড়িটি ভাঙচুর করেন যুবদল নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ফরিদপুর সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে যুবদলের কোনো কমিটি নেই। পরমানন্দপুরে আমার কোনো কর্মী এ ঘটনা ঘটায়নি।’

সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেন, ‘রাজনীতিতে এমন সহিংসতার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। এ ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। গত নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকও এমন আচরণ করেননি। নায়াব ইউসুফের কাছ থেকে এমন আচরণ এলাকাবাসী প্রত্যাশা করে না। এটি রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘণিভূত করবে।’ এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

এ কে আজাদের গণসংযোগে হামলার বিষয়ে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘আমি এসবের মধ্যে নেই। আমার নেতাকর্মীদের বলেছি, এ ধরনের কোনো কাজ করা যাবে না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এ কে আজাদ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই। তার গাড়িবহরের সঙ্গে আওয়ামী লীগ পদধারী নেতারা থাকেন। তাদের দেখে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘পরমানন্দপুরে আজ ছিল হাটের দিন। সেখানে এ কে আজাদ গণসংযোগ করতে গিয়েছিলেন। অপরদিকে যুবদলের লোকজনও গণসংযোগ করছিলেন। এ সময় দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থায় চলে এলে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’

দুটি গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এমবি