বগুড়ায় সারজিস আলমের সভাস্থলের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণ

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:১০

ছবি : বাংলাদেশের খবর
বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র সমন্বয় সভা চলাকালে সভাস্থলের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে জেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন দলটির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সভা চলার সময়ই হলরুমের বাইরে এ বিস্ফোরণ ঘটে। যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে মুহূর্তেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে বগুড়ার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে মাঠসংলগ্ন এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয় উদ্বোধন করেন সারজিস আলম। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জেলা পরিষদের হলরুমে সমন্বয় সভা চলাকালে পাশের একটি ভবন থেকে দুইটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়, যার একটি বিস্ফোরিত হয়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। পরে পুলিশ অবিস্ফোরিত ককটেলটি উদ্ধার করে।
বিস্ফোরণের পরও সভা অব্যাহত রাখেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘মানুষ এখনো জুলাই অভ্যুত্থানের কথা শুনলে শিউরে ওঠে। এই দেশের মানুষের সামনে নতুন করে কেউ স্বেচ্ছাচারিতা করতে পারবে না।’
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ও বিচারিক প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয় এবং নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন এগিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
ভবিষ্যৎ রাজনীতি প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘বিএনপি সব সময় জোটের মাধ্যমেই সরকার গঠন করেছে, জামায়াতও কখনো শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ ও আধিপত্যবাদের প্রশ্নে আগামী দিনে বিএনপি বা জামায়াত এককভাবে দেশ পরিচালনা করতে পারবে না। এই জায়গায় এনসিপির রাজপথে ও সংসদে শক্তিশালী ভূমিকা প্রয়োজন।’
তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী প্রজন্ম যদি সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে, তাহলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন সম্ভব নয়। যারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও খুনিদের বিচারের জন্য কাজ করবে, এনসিপি তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।’
বিস্ফোরণের পর সভা শেষে সারজিস আলম নিরাপদে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর স্থানীয় এনসিপি নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমালোচনা করেন।
তাদের অভিযোগ, সভার আগে একাধিকবার নিরাপত্তা চাওয়া হলেও পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। ফলে সভাস্থল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
তবে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, ‘জেলা পরিষদ চারদিক থেকে নিরাপত্তা দেওয়ালে ঘেরা। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ প্রধান গেটে দায়িত্ব পালন করছিল। পেছনের সংলগ্ন ভবন থেকে কে বা কারা দুটি ককটেল নিক্ষেপ করেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
জুয়েল হাসান/এমএইচএস