হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ইটভাটা চালু
মোস্তাফিজুর রহমান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৫৭
লক্ষীপুরের রামগতি ও কমলনগরের লাইসেন্সবিহীন ৫৮টি অবৈধ ইটভাটা হাইকোর্ট থেকে বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর এ আদেশ অমান্য করে রামগতি উপজেলায় কয়েকটি ইটভাটা চালুর কার্যক্রম শুরু করছে ভাটা মালিকেরা। এ পর্যন্ত ২৩ টি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, ৪টির বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। আর লাইসেন্স শর্ত ভঙ্গ করায় ২টির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রামগতি উপজেলার সূফিরহাট বাজার এলাকায় ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমানের মেঘনা-১ ও মেঘনা-২, ফারুক হোসেনের নূরুল ইসলাম ব্রিক্স, চরনেয়ামত এলাকায় মোসলেহ উদ্দীন কাজলের সততা ব্রিক্স, চৌধুরী বাজার এলাকায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছানাউল্যার তৃৃষা-১ ও তৃষা-২, রফিক কোম্পানীর রফিক-১, রফিক-২, মদিনা ব্রিক্স, হাজিগঞ্জ এলাকায় মো: হান্নানের ওহাব ব্রিক্স সহ প্রায় ২০ থেকে ২৫টি ভাটার মালিকেরা শ্রমিক দিয়ে নিজেদের ইটভাটা চালু করেছে।
এসব ভাটাগুলোর কোনটির অনুমোদন নেই। আইন-কানুন তোয়াক্কা না করে যে যেভাবে পারছে অবৈধ উপায়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতের আদেশ মেনে অনুমোদনহীন ইটভাটাগুলো চালু না করতে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হলেও এ নির্দেশনা কেউ মানছে না।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন দোলন হাইকোর্টে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার ৪৮ এবং কমলনগর উপজেলার ১০টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের আদেশ চাওয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৪ মার্চ বিচারপতি ফাহমিদ কাদের ও মুবিনা আসাফের বেঞ্চ অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধের আদেশ দেন। উচ্চ আদালতে রিটের পক্ষে থাকা অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন দোলন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রামগতিতে মোট ৫৩টি অবৈধ ইটভাটা আছে। এর মধ্যে শর্ত ভঙ্গ করায় ছালেখ-১ ও জননী ইটভাটার লাইসেন্স স্থগিত করে মামলা দেওয়া হয়। একই ভাবে কমলনগর উপজেলায় রয়েছে ১৩টি অবৈধ ইটভাটা।
রামগতি উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান জানান, যারা আদালতের আদেশ অমান্য করে অবৈধ ইটভাটা চালু করতেছে তার দায়-দায়িত্ব তারাই বহন করবেন।
লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, ইতোমধ্যে ২৩ টি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে ৪টির বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শর্ত আমান্য করায় ২টির লাইসেন্স স্থগিত করে মামলা করা হয়েছে। চলতি বছর কেউ অবৈধ উপায়ে ইটভাটা চালু করলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মামলা দায়েরের পাশাপাশি অভিযান অব্যহত থাকবে।
এদিকে রামগতির চর রমিজ ইউনিউনের চর আফজল এলাকায় ৩৬ টি ইটভাটা কিভাবে ছাড়পত্র পেল, তা জানতে চেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গত ৫ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ২০২৪-৩০ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘কী করে এক গ্রামে ৩৬টি ইটভাটা ছাড়পত্র পেলো সেটা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জবাব দিতে হবে’।
আইএইচ/

