চাঁদপুরে যত্রতত্র এলপিজি বিক্রি, নিয়ম মানছে না ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁদপুর
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৩৪
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চাঁদপুর জেলা সদরসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডার। ক্রেতাদের সহজলভ্যতার জন্য এলপিজি বিক্রি অনুমোদিত হলেও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের নিয়ম ও শর্তাবলি রয়েছে। কিন্তু কোন ধরনের নিয়ম মেনে না কেবল সুবিধার্থে একই দোকানে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি ও জ্বালানি তেল।
২০১৬ সালে অনিয়ম করে একই স্থানে এলপিজি ও জ্বালানি বিক্রির কারণে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে অগ্নিকাণ্ডে চারজন দগ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর প্রশাসন কিছুটা ব্যবস্থা নিলেও দীর্ঘদিন নীরব ভূমিকা পালন করেছে। সদর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি চাঁদপুরের আঞ্চলিক, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক এবং বাজারে দেখা গেছে, অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার। দোকানের সামনের রোদে রাখা সিলিন্ডার ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য। ব্যবসায়ীরা কতগুলো সিলিন্ডার রাখা যাবে বা সিলিন্ডারের মেয়াদ সংক্রান্ত কোনো ধারণা রাখেন না।
-68f9f681a0fe2.jpg)
শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মুদি, ফোন, চায়ের দোকান, সার-কীটনাশক ও টেইলারিং দোকানেও বিক্রি হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার। পাশাপাশি একই দোকানে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল। ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ধরণ অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হচ্ছে না।
বিস্ফোরক পরিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, ১২ লিটারের সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে এক দোকানে সর্বোচ্চ ৮টি, বড় হলে ৩টি রাখা যাবে। তবে সিলিন্ডার রোদে রাখা যাবে না, ঠান্ডা ও নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে।
সদর উপজেলার চান্দ্রা চৌরাস্তার ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘অনুমোদনের বিষয়টি জানি না। এলাকার অন্যান্য দোকানগুলোর মতো আমিও বিক্রি করি।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া বাজার, ভাটিয়ালপুর, নয়ারহাট, রামপুর ও গোয়ালভাওর এলাকার দোকানগুলোতে দেখা গেছে, প্রায় ২০-২৫টি করে সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে, অনেক দোকানি সেগুলো রোদের মধ্যে রেখেছেন।
শহরের বাসিন্দারা জানান, সিলিন্ডারের মেয়াদ সম্পর্কে তারা জানতেন না। তবে এখন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহারে সতর্ক থাকবেন। প্রতিটি সিলিন্ডারের উপরের অংশে এ, বি, সি ও ডি অক্ষরের সঙ্গে সাল লেখা থাকে। যেমন ‘এ’-২০২৫ মানে সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ ২০২৫ সালের মার্চ মাসে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস. এম. এন. জামিউল হিকমা বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার ও জ্বালানির বিক্রির বিষয়টি জানলাম। অতি শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, ভোক্তাদের সহজলভ্যতার কারণে স্থানীয় দোকানগুলোতে বিক্রির জন্য অনুমোদন লাগে না। তবে ১২ লিটারের ৮-১০টির বেশি সিলিন্ডার রাখা যাবে না। ১২ লিটারের বেশি ওজনের হলে ৩-৪টি রাখা যাবে। অতিরিক্ত মজুদ করতে হলে লাইসেন্স লাগবে। রাস্তার ওপর রাখা যাবে না, সিলিন্ডার ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে।
আলআমিন ভূঁইয়া/এআরএস

