টঙ্গী থেকে অপহরণের পর পঞ্চগড়ে উদ্ধার, যা জানালেন মুফতি মহিবুল্লাহ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৩৭
ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরের টঙ্গী থেকে অপহরণ হয়েছিলেন টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজী। নিখোঁজের একদিন পর পঞ্চগড়ে, পায়ে শেকলবাঁধা অবস্থায়, তাকে পুলিশ উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ভোরে পঞ্চগড়ের হ্যালিপ্যাড এলাকার সড়কের পাশে পায়ে শেকলবাঁধা অবস্থায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করেন। এরপর মুফতি মহিবুল্লাহকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আলেম-ওলামারা তাকে দেখতে হাসপাতালে ভিড় করেন।
ইমামের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে হাসপাতালে উপস্থিত হন- জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির ইকবাল হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ইসলামী শাসনতন্ত্র মুফতি মহিবুল্লাহকে অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
মুফতি মহিবুল্লাহ জানান, বুধবার ফজরের নামাজের পর হাঁটতে বের হওয়ার সময় একটি অ্যাম্বুলেন্সে পাঁচ ব্যক্তি এসে মুখে কাপড় চেপে তাকে তুলে নেয় এবং অমানবিক নির্যাতন চালায়। তিনি বলেন, তাদের মুসলমান বা হিন্দু মনে হয়নি, এছাড়া তারা বাংলাদেশিও মনে হয়নি। তারা প্রমিত ও শুদ্ধ বাংলায় গালাগাল করছিল।
তিনি আরও জানান, তাকে ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে বলা হয়েছিল। চিঠির মাধ্যমে কয়েক মাস ধরে তাকে ইসকনের বিরুদ্ধে কথা না বলতে হুমকি দেওয়া হতো। এমনকি ইসকনের পক্ষে কথা বললে তাকে এক কোটি টাকার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ২১ অক্টোবরের একটি চিঠিতে তাকে এনসিপি ও বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে বলা হয়েছিল। চিঠিতে বাংলাদেশকে ‘বাংলাদেশ’ না বলে ‘পূর্ববঙ্গ’ বলা হয় এবং বারবার ভারতের পক্ষে কথা বলার জন্য বলা হয়েছিল। এই ঘটনায় মুফতি মহিবুল্লাহ ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন।
পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান জানান, উদ্ধারের পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এর আগে তার জটিল অপারেশন করা হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিসের রোগীও। তাকে যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি জানান, খবর পেয়ে ভোরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টঙ্গী থানা ও তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা হাসপাতালে এলে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কে বা কারা তাকে অপহরণ করেছে তা তদন্তের বিষয়।
এদিকে, এই ঘটনায় ইসকনকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড়ে বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পথসভায় মুফতি মহিবুল্লাহ অপহরণ ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
- এসকে দোয়েল/এমআই


