মিঠাপুকুরে বিএনপি-জামায়াতের একই নামের প্রার্থী
মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২৩
রংপুরের মিঠাপুকুরে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে চমক তৈরি হয়েছে, মিঠাপুকুরে একই নামে দুই প্রার্থী। দুজনেরই নাম অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, একজন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি সমর্থিত প্রার্থী, অন্য জন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এর প্রার্থী।
এ নিয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার ভোটারদের মধ্যে তৈরি হয়েছে কৌতূহল ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, একই আসনে একই নামে দুই প্রার্থী থাকায়, ভোট দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে, নইলে ভুল হতে পারে। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী জামায়াতে থেকে প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে, তিনি দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন, আর অন্য দিকে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে নির্বাচন করবেন, ধানের শীর্ষ প্রতীক এ অধ্যাপক গোলাম রব্বানী। জামায়াতের গোলাম রব্বানী গণিতের অধ্যাপক, আর বিএনপির গোলাম রব্বানী বিজ্ঞানের অধ্যাপক।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল (০৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের নামের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেছে। এ তালিকায় ৩৯ বছর আগে হারানো রংপুরের সংসদীয় ছয়টি আসন পুনরুদ্ধারে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন স্থানীয় ছয় নেতা। তার মধ্যে থেকে রংপুর -২৩ মিঠাপুকুর -৫ আসন থেকে ভোটের মাঠে লড়াই করবেন, অধ্যাপক গোলাম রব্বানী।
সোমবার (০৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন, দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহওর মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মিঠাপুকুর-৫ আসন। স্বাধীনতার পর অধিকাংশ সময় এই আসন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দখলে ছিল। বিএনপি থেকে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল।
এবার সেই হারানো আসন পুনরুদ্ধারে চমক দেখাতে চান অধ্যাপক গোলাম রব্বানী। প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই আসন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার ও তার দোসরদের দখলে ছিল। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে অন্যায়ভাবে তারা এতদিন ক্ষমতা দখল করে ছিল। দলের কর্মী হিসেবে আমি এ আসন থেকে মনোনীত হয়েছি। আশা করছি, এবার সম্মিলিতভাবে আমরা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে পারব।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নামের মিল ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ব্যালট পেপারে প্রার্থীদের নামের সঙ্গে তাদের দলীয় প্রতীক স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে, যাতে ভোটাররা সহজেই পার্থক্য করতে পারেন।
মিঠাপুকুর প্রেস ক্লাবে সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, জনগণের মধ্যে এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। দু'জনই শিক্ষাবিদ, দুজনেরই আলাদা জনসম্পৃক্ততা রয়েছে।
তবে জনগণ এখন আর শুধু নাম দেখে নয়, কাজ ও আদর্শ দেখে সিদ্ধান্ত নেবে, কে হবেন প্রকৃত প্রতিনিধি তা নির্ধারণ করবে জনগণই। আশা করি মিঠাপুকুরবাসী প্রকৃত যোগ্য, জনবান্ধব ও আদর্শবান প্রার্থীকে মূল্যায়ন করবে।
মোঃরাখিবুল হাসান রাখিব/এনএ

