মুন্সীগঞ্জে অটোচালক মজিবল মাঝি হত্যা রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৫
মুন্সীগঞ্জ প্রিতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:১১
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নিখোঁজের তিন দিন পর খাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অটোচালক মোহাম্মদ মজিবল মাঝির হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন—সোহাগ মোল্লা (৪৩), জয় (৩১), ইমরান (৩০), হারুন (৫১) ও আলী হোসেন (৪০)। তাদের কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এম. সাইফুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে ওসি জানান, নিহত মজিবল মাঝি (৪৪) পেশায় অটোরিকশাচালক ছিলেন এবং পরিবার নিয়ে ঢাকার লালবাগের ইসলামবাগ এলাকায় বসবাস করতেন।
গত ৩১ অক্টোবর বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে তিনি অটোরিকশা নিয়ে গ্যারেজ থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন তার ছেলে রাসেল লালবাগ থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।
পরে ৩ নভেম্বর সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রতনপুর মধ্যপাড়া এলাকায় একটি ডোবায় বিছানার চাদর ও কম্বল পেঁচানো অবস্থায় ভেসে থাকা মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে নিহতের স্বজনরা এসে মরদেহটিকে মজিবল মাঝি বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ জানায়, নিহতের দুই হাত ও দুই পা মোটা প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে অন্যত্র হত্যা করে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ডোবায় ফেলা হয়েছে।
ঘটনার তদন্তে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)-এর তত্ত্বাবধানে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজিব দের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বর্ণনা অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় মজিবল মাঝিকে ‘মাওয়া যাওয়ার’ কথা বলে কৌশলে পঞ্চসার ইউনিয়নের তেলেরহিল এলাকার ইমরানের ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে অচেতন করা হয়। এরপর সোহাগ গলায় রশি প্যাঁচিয়ে ধরে, ইমরান পা ধরে রাখে এবং জয় বুকের ওপর বসে কাঁচি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করে।
হত্যার পর লাশটি বিছানার চাদর ও কম্বলে পেঁচিয়ে সোহাগের অটোরিকশায় করে রতনপুর এলাকায় ফেলা হয়। পরদিন আসামিরা নিহতের অটোরিকশা হারুনের কাছে ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে, পরে তা রামসিং আলীর গ্যারেজে আরও এক লাখ এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
নিহতের স্বজনরা জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন।
আবু সাঈদ/এআরএস

