বগুড়ায় স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরিকল্পিত হত্যা, স্ত্রী-প্রেমিক গ্রেপ্তার
বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৬
ছবি : বাংলাদেশের খবর
বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের হাজরাদিঘী তালুকদারপাড়ার বেকারি ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম (৪০) খুন হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয় ধানক্ষেত থেকে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামিমা আক্তার (৩২) এবং তার পরকীয়া প্রেমিক খালাতো ভাই বিপুল (৩৮)। তাদের পরিকল্পনায় দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে জহুরুলকে অচেতন করে হত্যা করা হয়।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডের নৃশংস দিক।
জানা গেছে, শৈশব থেকেই শামিমা আক্তার ও বিপুলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিপুলকে না পেলেও জহুরুলের সঙ্গে শামিমার বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পরও শামিমা ও বিপুলের পরকীয়া সম্পর্ক চলতে থাকে। এ নিয়ে জহুরুলের সঙ্গে শামিমার দাম্পত্য জীবনে বিরোধ তৈরি হয়।
পুলিশ জানায়, শামিমা আক্তার সোমবার রাতে দুধের সঙ্গে প্রায় ১৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে স্বামীকে অচেতন করে। এরপর ফোন করে প্রেমিক বিপুলকে ডাকেন। ঘুমন্ত জহুরুলকে বাসা থেকে বের করে পাশের অর্ধনির্মিত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেয়ালে আঘাত করে মাথায় গুরুতর জখম করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভাঙা টয়লেটের টাইলস দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে মরদেহ ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়।
হত্যার পর শামিমা আক্তার নিজের অপরাধ ঢাকতে নাটকীয়তার আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সকালে লাশ উদ্ধারের পর তিনি নিজেই সাংবাদিকদের কাছে স্বামীর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করেন।
শামিমা আক্তারের বাবা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করার পর পুলিশের নিবিড় তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, ‘পরকীয়ার জেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সব তথ্য পাওয়া গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত জহুরুলের ১০ বছরের এক ছেলে ও ৬ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত শামিমা আক্তার ও বিপুলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বর্তমানে মামলার অন্যান্য দিকও খতিয়ে দেখছে।’
- জুয়েল হাসান/এমআই

