শ্রীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ গ্রেপ্তার ৭
অস্ত্র-গুলিসহ সরঞ্জাম উদ্ধার
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:১৫
ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামে যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ সাতজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন গাজীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী এবং সৌদি আরবের মক্কা মেসফালাহ বিএনপির সভাপতি পরিচয়ধারী আলহাজ এনামুল হক মোল্লা (৪৮)।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এনামুল হকের নিজ বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনী। অভিযানটি চলে ভোর সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর আর্মি ক্যাম্পের তত্ত্বাবধানে মেজর খন্দকার মহিউদ্দিন আলমগীরের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় এনামুল হকের সঙ্গে আরও ছয়জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন শওকত মীর, জাহিদ, মোস্তফা, সিদ্দিক, বুলবুল ও তোফাজ্জল।

অভিযান চলাকালে তাদের অবস্থানস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, চার রাউন্ড গুলি, চারটি ওয়াকিটকি, চারটি বেটন, দুটি ইলেকট্রিক শর্ট মেশিন, একটি হ্যামার নেল গান ও একটি চাকু। পরে আটক ব্যক্তিদের ও জব্দকৃত অস্ত্র-সরঞ্জাম শ্রীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৮ মে হেলিকপ্টারে করে নিজ গ্রাম বরকুলে আসেন এনামুল হক মোল্লা। এরপর থেকে তিনি বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এলাকায় গণসংযোগ করে আসছিলেন। অবশেষে বুধবার গভীর রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনি ও তাঁর ছয় সহযোগী আটক হন।
এনামুল হক মোল্লা শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে। স্থানীয়দের দাবি, তিনি একসময় বরমী ইউনিয়ন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। প্রায় ১৫ বছর সৌদি আরবে অবস্থান করেছেন তিনি। সেখানে তিনি মক্কার মেসফালাহ বিএনপির সভাপতি ছিলেন বলে দাবি করলেও, দলীয় সূত্রে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি মক্কায় এলডিপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে এনামুল হকের ছোট ভাই আশরাফ মোল্লা বলেন, ‘গাজীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন আমার ভাই। তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। রাত দেড়টার দিকে কয়েক দফায় তল্লাশির নামে বাড়িতে হানা দেয় যৌথবাহিনী। চার ঘণ্টা ধরে চলে তাণ্ডব। এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।’
অন্যদিকে শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘এনামুল কখনো বিএনপির রাজনীতি করতেন না। তিনি দেশে ফিরে ভুয়া রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করছেন। আমার জানা মতে তিনি মক্কায় এলডিপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। দেশে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে। বিএনপিতে সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান নেই।’
গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মেরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আটক ব্যক্তিরা বর্তমানে শ্রীপুর থানায় রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তদন্ত শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।’
আতাউর রহমান সোহেল/এআরএস

