পঞ্চগড়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ‘দাদা’ গ্রেপ্তার
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৬
ছবি : বাংলাদেশের খবর
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় ১৪ বছরের এক কিশোরী স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদি হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহানকে (৫৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আব্দুস সোবহান রওশনপুর এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ওই কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। শনিবার রাতে অভিযুক্ত সোবহানের গ্রেপ্তার, শাস্তি ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ৫৭ বছর বয়সী আব্দুস সোবহান বাড়িতে লোকজন না থাকায় ওই কিশোরীকে একা পেয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে জোর করে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। এতে ওই কিশোরী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু ধর্ষণের কারণে সে অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েছে সে। এখন সে সাত মাসের অন্তঃসত্তা। কীভাবে একজন দাদার বয়সী এরকম বিবেকহীনভাবে অসামাজিক কাজ করতে পারে? অভিযুক্ত এই সুবহান চরিত্রহীন লোক। তিনি এর আগেও অনেক কুকর্ম করে জরিমানা গুনেছেন। সে কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে ধর্ষণ করছে।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী বলেন, ‘অভিযুক্ত সোবহান সম্পর্কে আমার দাদা হয়। বাড়িতে প্রায়ই আসতেন। গত এপ্রিলের ৪ তারিখ শুক্রবারে বাড়িতে আমি একা ছিলাম। মা-বাবা মরিচ তুলতে গিয়েছিলেন। ঘরে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ বুঝে উঠার আগেই লোকটা আমাকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি যাতে না বলি সে জন্য নানা ভয়ভীতি দেখায়। মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ কারণে কাউকে কিছু জানাইনি। এর মধ্যে আমার গর্ভে সন্তান চলে এসেছে। এখন আমি সাত মাসের অন্তঃসত্তা। আমি এর কঠিন বিচার চাই।’
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি পাথর শ্রমিক। পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। ঘটনাটি জানতাম না। কখনো জানানো হয়নি। গত বৃহস্পতিবার জানতে পেরে মেয়ের বিচার পাব কিনা খুবই চিন্তায় পড়েছি। আমি এখন কী করবো, মেয়েটা সবেমাত্র ক্লাস এইটে পড়ালেখা করছে। এর মধ্যে দাদার বয়সী সোবহান লোকটা মেয়েটাকে জোর করে ধর্ষণ অন্তঃসত্তা করে ফেলেছে। আমি এর সুবিচার চাই। আমার মেয়ের যে ক্ষতি করেছে তার উপযুক্ত বিচার চাই। ধর্ষক সোবহানের ফাঁসি কিংবা আইনের যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।’
তিরনইহাট ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ধরনের সামাজিক অবক্ষয় হতে আগামী দিনে মানুষ বের হয়ে আসতে পারে তার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ হতে অভিযুক্ত ধর্ষকের কঠোর শাস্তি কামনা করছি।’
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানার কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নাজির হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
- এসকে দোয়েল/এমআই

