কুমিল্লা-৬ আসন
‘আমাদের বটবৃক্ষ ইয়াছিনকে মনোনয়ন দিন’
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৩৪
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর টাউন হল মাঠের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলাসহ নানা নির্যাতনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব চৌধুরীর স্ত্রী নাসরিন খানম।
তিনি বলেন, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির সঙ্গে থাকার কারণে বহু পরিবারের স্বামী, বাবা, ভাই ও সন্তান মামলা, হামলা, কারাবরণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন। সেই কঠিন সময়ে এসব পরিবারের পাশে থেকে আইনি সহায়তা, আটক নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের ভরণপোষণ, আহতদের চিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসনসহ মানবিক সহায়তা দিয়েছেন আমিন উর রশিদ ইয়াছিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে শত শত মামলা হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করেছেন। অনেকেই পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারেননি, নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজ বাড়িতে রাত কাটাতে পারেননি, এমনকি স্বজনদের জানাজা ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারেননি। সে সময় নেতাকর্মী পরিবারের অন্যতম ভরসা ছিলেন আমিন উর রশিদ ইয়াছিন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় কুমিল্লা-৬ আসনে আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের নামের পরিবর্তে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বক্তারা দাবি করেন, মনিরুল হক চৌধুরী এ অঞ্চলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের কাছে ‘কম পরিচিত’। রাজনৈতিক সংকট ও নির্যাতনের সময় তিনি এলাকায় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন না।
বক্তারা বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে দলের ত্যাগী, জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতাকে মনোনয়ন না দিলে বিজয় অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উদ্দেশে তারা দাবি জানান—কুমিল্লা বিএনপির দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের অভিভাবক হিসেবে যিনি ভূমিকা রেখেছেন, সেই ত্যাগী নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনকে যেন কুমিল্লা-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হয়।
মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী আনা আজিজা বলেন, ‘আমার স্বামীর নামে ৩২টি মামলা ছিল। প্রতিটি মামলার আইনি সহায়তা, জেলখানায় পিসির টাকা, চিকিৎসা, জামিন ও পরিবারের দেখাশোনা—সব কিছুই দায়িত্ব নিয়ে করেছেন হাজী ইয়াছিন। জেলখানায় স্বামী থাকার সময় অসহায় এই পরিবারের পাশে তিনি সর্বক্ষণ ছিলেন। গত ১৭ বছর ধরে তিনি শত শত নির্যাতিত নেতাকর্মীর অভিভাবক ও আশ্রয়স্থল ছিলেন। আমরা দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ জানাই—আমাদের বটবৃক্ষ যেন উপড়ে না ফেলা হয়।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী আবিদা সুলতানা প্রমী, বিএনপি নেতা ইকরাম হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগম, মনির হোসেনের স্ত্রী লাকি আক্তার, মো. আক্তার হোসেনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার, আবুল কাশেমের স্ত্রী জাহেলা বেগম, মহানগর যুবদল নেতা মনছুর নিজামীর স্ত্রী মহিমা আক্তার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলাসহ নির্যাতনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এআরএস

