চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এলাকায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শেষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে চসিক।

চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, সারাদেশে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচিতে গড়ে ৯১ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও চসিক অর্জন করেছে ৯৩ শতাংশ। আগামীকাল শেষ দিনে এই হার ৯৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।

চসিকের বিভিন্ন জোনের মধ্যে আগ্রাবাদ জোনে শতভাগ, বন্দর ৯৫ শতাংশ, কাপাসগোলা ৮৬ শতাংশ, মেমন ৯৯ শতাংশ, উত্তর কাট্টলি ৯৭ শতাংশ ও পাঁচলাইশ জোনে ৭৪ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) টাইগারপাসস্থ চসিক কনফারেন্স রুমে টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ের সমন্বয় কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী, ইউনিসেফ কনসালটেন্ট ডা. সারোয়ার আলম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর এসআইএমও ডা. খাদিজা আহমেদসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।

সভায় বক্তারা বলেন, শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ—তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টাইফয়েড একটি মারাত্মক রোগ, যা অনেক সময় সাধারণ জ্বর হিসেবে ধরা পড়ে না। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে অঙ্গহানির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, বাইরে থেকে এই টিকা নিতে ১২ থেকে ১৪শ টাকা খরচ হয়, কিন্তু চসিক এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দিচ্ছে। কিছু এলাকায় টিকাদানে ভালো সাড়া মিললেও অনেক এলাকায় অভিভাবকদের অনাগ্রহের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটছে। আগামীকাল শেষ দিনের মধ্যে সবাইকে টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান তারা।

উল্লেখ্য, কমিউনিটি পর্যায়ে ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ১ হাজার ৫৪৬টি স্কুল ও ৭৮৩টি আউটরিচ সাইটে প্রায় ৮ লাখ ২৯ হাজার ৩০১ শিশুকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৩১ হাজার ১৬৭ জন স্কুল শিক্ষার্থী এবং ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৮৪ জন স্কুলবহির্ভূত শিশু।

চসিক স্বাস্থ্য বিভাগের আয়োজনে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সহযোগিতায় এই টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।

এআরএস