রোহিঙ্গার হাতে এনআইডি
ফেনীতে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:০৪
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) শুলকবহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন এবং পরবর্তীতে তা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করার অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক অংটি চৌধুরী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে এজাহার দায়ের করেছেন।
মামলার আসামি করা হয়েছে রোহিঙ্গা নাগরিক আবদুল জলিল, চট্টগ্রামের বন্দর থানার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা ও বর্তমানে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম এবং চসিকের শুলকবহর ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন সহকারী পিন্টু কুমার দে-কে। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের এজাহার অনুযায়ী, আবদুল জলিল নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করলেও তার নাগরিকত্বের কোনো বৈধ নথি নেই। তার নামে কোনো জাতীয়তা সনদ বা ভূমির দলিলও নেই। তিনি দাবি করেছেন, তার পিতা-মাতা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে মারা গেছেন, তবে মৃত্যুসনদ পাওয়া যায়নি।
এরপর ২০১১ সালের ২২ জুলাই তৎকালীন জন্ম নিবন্ধন সহকারী পিন্টু কুমার দে-কে সহযোগিতায় জাল তথ্য দিয়ে জন্ম সনদ তৈরি করেন আবদুল জলিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৪ মে একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম এবং জন্ম নিবন্ধন সহকারী অশোক কুমার দত্তের জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে আরেকটি ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করা হয়।
দুদক জানায়, এই জাল জন্ম সনদ ব্যবহার করে আবদুল জলিল নির্বাচনী ফর্মে ভুয়া তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। তৎকালীন থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বন্দরের নির্বাচন অফিস থেকে কোনো রেজিস্টার ছাড়াই জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা হয়।
দুদকের ফরেনসিক পরীক্ষায় জন্ম সনদে ব্যবহৃত স্বাক্ষর ও সিল জাল প্রমাণিত হয়েছে। তদন্তে আরও জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের রেকর্ডে আবদুল জলিল নামে কোনো বৈধ জন্ম নিবন্ধনের নথি নেই; শুধু একটি ক্রমিক নম্বর আছে, কিন্তু তার বাস্তব অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে এ মামলার বিষয়ে জানতে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি, তাই তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এম. এমরান পাটোয়ারী/এআরএস

