Logo

সারাদেশ

কৃষক দলের নেতা নাসিরের গ্রেপ্তার চাইলেন মহিলা দল নেত্রী মুন্নী

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:২৬

কৃষক দলের নেতা নাসিরের গ্রেপ্তার চাইলেন মহিলা দল নেত্রী মুন্নী

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে যুবদল নেতা মিনহাজুর রহমান লিপনের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা মহিলা দলের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্নী রহমান এক ফেসবুক পোস্টে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পোস্টে তিনি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে ‘গডফাদার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, তার সন্ত্রাসী কার্যক্রমেই ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির রাজনীতি আজ চরম সংকটে পড়েছে। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

মুন্নী রহমান অভিযোগ করেন, ৭ নভেম্বর ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে যুবদল নেতা ও তার স্বামী মিনহাজুর রহমান লিপনের ওপর হামলা চালায় নাসিরুল ইসলামের লোকজন। গুরুতর আহত লিপন বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

তার দাবি, ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বোয়ালমারীতে বিএনপির অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ছবি পর্যন্ত নষ্ট করেছে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের লোকজন।

তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের উচিত এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করানো এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।’ মুন্নীর ভাষ্য, যুবদল নেতা মিনহাজুর রহমান লিপন শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও প্রতিষ্ঠিত এক পরিবারের সদস্য—লিপনের দাদা মালেক মিয়া পাঁচবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বাবা ওলিয়ার রহমানও ছিলেন চেয়ারম্যান এবং এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। লিপনের চাচা এ কেএম জামালউদ্দিন নান্নু মিয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। এমন একটি সম্মানিত ও অবদানশীল পরিবারের সন্তানকে নাসির বাহিনী নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে—এ অভিযোগ তুলে মুন্নী প্রশ্ন করেন, ‘লিপন বা তার মতো জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মীদের কেন খুন করতে চান খন্দকার নাসির?’

খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ তুলে ধরে মুন্নী বলেন, বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করে কমিটি বাণিজ্য, মামলা বাণিজ্য, ভূমি দখল ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিস্বার্থে পুরো ফরিদপুর-১ আসনকে বিপর্যস্ত করেছেন। একই সঙ্গে দাবি করেন, দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে নাসিরুল ইসলাম অতীতে পাঁচবার বহিষ্কৃত হয়েছেন।

১৯৯৬ সালের দুটি জাতীয় নির্বাচনে নাসিরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুন্নী রহমান। তার ভাষ্য, ধানের শীষের বিপক্ষে হাতি প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগে এলাকায় তাকে ‘গাইছো নাসির’ নামে ডাকত মানুষ। একই বছরের সাধারণ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে সর্বনিম্ন ভোট পেয়ে জামানত হারান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর খন্দকার নাসিরের আর্থিক অবস্থার ‘অস্বাভাবিক উন্নতি’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুন্নী। তার দাবি, চাঁদাবাজি ও কমিটি বাণিজ্য থেকেই নাসিরুল ইসলামের সম্পদ বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘৭ নভেম্বর বোয়ালমারীতে যে তাণ্ডব হয়েছে, তা এলাকার রাজনীতিতে নজিরবিহীন। বিস্ফোরক মামলায় তিনি ১ নম্বর আসামি হওয়া সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’

খন্দকার নাসিরুল ইসলামের গ্রেপ্তার এবং দলের সব পর্যায় থেকে বহিষ্কার দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন মুন্নী রহমান।

পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থে নয়, দলকে রক্ষার স্বার্থে গাইছো নাসিরকে দ্রুত বহিষ্কার করুন।’

এদিকে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভস্মীভূত হয়। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয় এবং বিস্ফোরক আইনে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার পর নাসির ও তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

মহিলা দল নেত্রী মুন্নী বলছেন, আসামিরা প্রকাশ্যে থাকলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। এমনকি শনিবার ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় একজন নেতা আসছেন; তিনি যাতে তার স্বামীর ওপর হামলার ঘটনায় দলীয় হাইকমান্ডকে বিষয়টি জানান। একই সঙ্গে নাসির যাতে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারেন তারও নিশ্চয়তা চান মহিলা দলের এ নেত্রী।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান দাবি করেন, আসামি গ্রেপ্তারে তাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমরা আসামিদের বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছি।’

এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

যুবদল

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর