শীতের শুরুতেই কারাবন্দিদের জন্য ব্যতিক্রমী এক মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন মাগুরা জেলা কারাগারের জেল সুপার শেখ মো. মহিউদ্দীন হায়দার।
শুক্রবার(১৪ নভেম্বর) কারাগারে থাকা বন্দিদের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তেলের পিঠা বানিয়ে বিতরণ করেন তিনি। এতে বন্দিদের মধ্যে যেমন খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি তাদের পরিবারের সদস্যরাও এমন উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, এর আগেও গত ঈদ উপলক্ষে কারাবন্দিদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছিলেন এই জেল সুপার। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মানবিক আচরণ, স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে কারাবন্দিদের কল্যাণে নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে তিনি ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন।
প্রায় সাড়ে ১১ লাখ জনসংখ্যার মাগুরায় ১৭২ জনের ধারণক্ষমতার কারাগারে প্রতিদিনই দুই থেকে তিনগুণ বন্দিকে রাখা হয়। তারপরও কারা অভ্যন্তরে খোলামেলা পরিবেশ, মানবিক আচরণ ও শৃঙ্খলা রক্ষায় মাগুরা কারাগারটি একটি উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি কারামুক্ত কয়েকজন বন্দি জানান, কারা অভ্যন্তরে নির্যাতন বা অনিয়ম ঠেকাতে প্রতি মাসে বন্দি-দরবার ও গণশুনানির আয়োজন করা হচ্ছে। অভিযোগ বাক্সের মাধ্যমে নানা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হলেও স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নয়ন প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।
কারামুক্ত খন্দকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জেল সুপার অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও মানবিক। গত ঈদে আমাদের পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গেলে জেলগেটে বিশেষভাবে আপ্যায়ন করা হয় এমন ঘটনা আগে কখনও দেখিনি।’
আরেক বন্দি রিয়াজুল ইসলাম জানান, ‘শীতের শুরুতেই আমাদের প্রত্যেককে ৩টি করে তেলের পিঠা দেওয়া হয়েছে। আমাদের গ্রামে এখনো পিঠা হয়নি। কারাগারে এমন আয়োজন সত্যিই নতুন দৃষ্টান্ত।’
জেল সুপার শেখ মো. মহিউদ্দীন হায়দার বলেন, ‘কারাগারে অপরাধী থাকলেও আইনের মধ্যেই মানবিক আচরণ সবার অধিকার। বন্দিদের মনোবল ধরে রাখতে এবং শীতের আমেজ ভাগ করে নিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ‘শুক্রবার কারাগারের ৩১৪ জন বন্দির জন্য তেলের পিঠা বানানো হয় এবং এর জন্য কোনো অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হয়নি।’
মানবিকতা, দায়িত্ববোধ ও ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কারণে মাগুরা জেল সুপারের এ কার্যক্রম ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে।
তাছিন জামান/এনএ

