সরকারি নির্দেশনা মানছে না মাদ্রাসা, ডোনেশনের প্রশ্নে শুরু বার্ষিক পরীক্ষা
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:২৫
ছবি : সংগৃহীত
সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ফেনী জেলার বেশিরভাগ মাদ্রাসায় গাইড প্রকাশনীর ডোনেশনকৃত প্রশ্ন দিয়েই বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় এনসিটিবির নির্ধারিত সিলেবাসের বদলে বিভিন্ন গাইড বই প্রকাশনীর সরবরাহ করা প্রশ্নপত্র ব্যবহার হচ্ছে-এমনই তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
জানা যায়, বছরের শুরুতেই বিভিন্ন গাইড প্রকাশনীর সঙ্গে অলিখিত চুক্তির মাধ্যমে মাদ্রাসাগুলো ডোনেশন নেয়। এর বিনিময়ে সারা বছর প্রকাশনীগুলোর গাইড বইকে পাঠ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সেই চুক্তি অনুযায়ী এখন বার্ষিক পরীক্ষায়ও প্রকাশনীগুলোর তৈরি প্রশ্নপত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোনাগাজীর দারোগার হাট আল জামেয়াতুদ দ্বীনিয়া আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা করিমুল হক স্বীকার করেছেন যে, তাদের প্রতিষ্ঠান এই বছর ডোনেশনের ভিত্তিতে ‘দারসুন’ প্রকাশনীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে এবং সেই প্রকাশনীর প্রশ্ন দিয়েই পরীক্ষা চলছে।
একইভাবে পরশুরাম উপজেলার সুবারবাজার ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ছাদেক জানিয়েছেন, তারা ‘আল ফাতাহ’ প্রকাশনীর ডোনেশনকৃত প্রশ্নেই বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছেন।
সোনাগাজীর ছাড়াইতকান্দি হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক কর্মরত শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের মাদ্রাসায় ‘লেকচার’ প্রকাশনীর সরবরাহ করা প্রশ্নপত্র ব্যবহার হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহায়ক বই নিষিদ্ধ করা ও নিজস্বভাবে প্রশ্ন প্রণয়নের নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এই পরিস্থিতিতে জেলার শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. সফী উল্লাহ বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে নিজেরাই প্রশ্ন প্রণয়ন করে পরীক্ষা নিতে হবে। প্রকাশনীর ডোনেশনকৃত প্রশ্ন ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফেনীর শিক্ষাঙ্গণে ডোনেশন নির্ভর পরীক্ষার এ অভিযোগ নতুন করে নজর কাড়ছে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় অনিয়ম কতটা গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে-তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
- এম. এমরান পাটোয়ারী/এমআই

