সরকারি অফিসে প্রকাশ্যে ধূমপান, সমালোচনার ঝড়
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:১১
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জে গণপূর্ত বিভাগের হিসাব সহকারী শেখ আমজাদ হোসাইন সরকারি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারে বসে উপসহকারী প্রকৌশলীর সাথে ধূমপান করছেন-এমন দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।
সরজমিনে গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) গণপূর্ত বিভাগ মানিকগঞ্জের কার্যালয়ে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগের হিসাব সহকারী শেখ আমজাদ হোসাইন তার নিজ কক্ষে বসে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাতেনের সাথে হিসাব করছেন এবং এ সময় তিনি চেয়ারে বসেই ধূমপান (সিগারেট) করছেন।
সরকারি অফিস ‘পাবলিক প্লেস’ হওয়ায় নিজ কক্ষে ধূমপান করলে সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫–এর সংজ্ঞা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি/আধা-সরকারি অফিস, হাসপাতাল, আদালত, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনালসহ সব অফিস ভবনই ‘পাবলিক প্লেস’-এর অন্তর্ভুক্ত। এসব স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ এবং আইন ভঙ্গ করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আইনে বলা হয়েছে, কোনো তামাকজাত দ্রব্য প্রজ্বালিত অবস্থায় ধারণ করা বা তার ধোঁয়া গ্রহণ বা নির্গত করাও ধূমপান হিসেবে গণ্য হবে। ফলে নিজ অফিস কক্ষে ধূমপান করা সরাসরি আইন লঙ্ঘনের শামিল।
এ ধরনের আইন ভঙ্গের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। অপরাধের ধরন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী শাস্তি সতর্কীকরণ থেকে শুরু করে ইনক্রিমেন্ট স্থগিত, সাময়িক বরখাস্ত কিংবা চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর শাস্তিও হতে পারে।
সরকারি অফিস কক্ষে বসে ধূমপানের বিষয়ে মানিকগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগের হিসাব সহকারী শেখ আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কাজের অনেক চাপ আপনি তো দেখেছেন। সেই কাজের চাপে পড়ে আমি ও আমার সাথে থাকা ইঞ্জিনিয়ার বাতেন সাহেব একসাথে ধূমপান করি। সরকারি অফিসে ধূমপান করা নিষেধ-এ বিষয়ে আমার আইন জানা নাই।’
উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমারও ধূমপানের অভ্যাস আছে, তবে আজকে একটানা কাজের চাপে পড়ে এরকম হয়েছে। এমনিতে পাশে খালি একটি রুমে আমরা ধূমপান করি। এটা ভুলবশত হয়ে গেছে-আর হবে না।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মানিকগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বনাথ বণিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনা সম্পর্কে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এমনিতে কোনো পাবলিক ধূমপান করলে আমরা হাতেনাতে ধরে ৩০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান আছে। তবে সরকারি কর্মচারী বা কর্মকর্তা হলে চাকরিবিধি অনুযায়ী তার ডিপার্টমেন্ট তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
- আফ্রিদি আহাম্মেদ/এমআই

