Logo

সারাদেশ

বরিশালে চিকিৎসার অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

Icon

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬

বরিশালে চিকিৎসার অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সিজার অপারেশনের পর চিকিৎসক ও বেসরকারি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় সাথী আক্তার পরি (২২) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরপরই সিজারকারী চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কৌশলে ক্লিনিক থেকে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়ে ক্লিনিক ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশালের বাটাজোর এলাকার মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

নিহত সাথী আক্তার পরি উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠী গ্রামের ইমন আকনের স্ত্রী।

নিহতের শ্বশুর নজরুল আকন জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে পুত্রবধূর প্রসববেদনা শুরু হলে তাকে মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। প্রথমে ক্লিনিকের চিকিৎসক রাজিব কর্মকার নরমাল ডেলিভারির কথা বলে পাঁচ হাজার টাকার বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষা করান। পরে তিনি সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় সিজারের বিষয়ে আপত্তি জানালে বরিশাল থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এনে অপারেশন করানোর আশ্বাস দেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ করে নজরুল আকন বলেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন পরি। সিজারের পরপরই সিজারকারী চিকিৎসক ক্লিনিক ত্যাগ করেন। আধা ঘণ্টা পরে পরিকে বেডে শোয়ানো হলে দেখা যায় তার শরীর সম্পূর্ণ সাদা হয়ে গেছে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে।

শ্বাসকষ্টের বিষয়টি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা জানায়, ক্লিনিকে কোনো অক্সিজেন নেই, বাইরে থেকে আনতে হবে। পরে একজন স্টাফ অক্সিজেন আনতে গিয়ে আর ফেরত আসেননি।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, পরির অবস্থা আরও খারাপ হলে আমরা চিৎকার–চেঁচামেচি শুরু করি। এ সময় চিকিৎসক রাজিব কর্মকার এসে পরীক্ষা করে কিছু না জানিয়ে ক্লিনিক থেকে বের হয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিনিকের সব স্টাফ কৌশলে পালিয়ে যায়।

পরে পাশের একটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক এনে পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারি, পরি মারা গেছে। তবে ক্লিনিকের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ল্যাব টেকনোলজিস্ট প্রান্ত হালদার জানিয়েছেন, ডা. সমিরন হালদার নামের এক চিকিৎসক পরির সিজার অপারেশন করেন।

এ বিষয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ওই রোাগীর সিজারকারী ডা. সমিরন হালদারের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মৃতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহতা জারাব সালেহীন বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • এস এম মিজান/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

মৃত্যু

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর