Logo

সারাদেশ

মাছের আঁশে স্বপ্ন বুনছে নড়াইলের নারীরা

Icon

নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:১৯

মাছের আঁশে স্বপ্ন বুনছে নড়াইলের নারীরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

মাছ কাটার পর তা থেকে যত্ন করে আলাদা করা হচ্ছে আঁশ। সেই আঁশ বস্তায় ভরে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা নিজ নিজ বাড়িতে। বাড়িতে নিয়ে পরিষ্কার করে শুকানো হয় রোদে। এরপর শুকনো আঁশ চলে যায় রপ্তানিকারকদের আড়তে।

নড়াইল সদর উপজেলার পঙ্কবিলা গ্রামে চিত্রা নদীর পাড়জুড়ে এখন আঁশ শুকানোর ব্যস্ততা। পলিথিন বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে মাছের আঁশ। এই আঁশ বিক্রি করে সচ্ছলতা ফিরেছে গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবারের।

এসব পরিবারের পুরুষ সদস্যরা অনেকেই মাছের আড়তে কাজ করেন, আর পরিবারের নারীরা ওই আঁশ পরিষ্কার করে শুকান নদীর তীরে। দুই দিন রোদে শুকিয়ে তা বস্তায় ভরে রাখেন তারা।

প্রকারভেদে এসব আঁশ বিক্রি হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে। যা থেকে বছরে আয় হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়ে পলিথিন বিছিয়ে রোদে শুকানো হচ্ছে মাছের আঁশ।

এ সময় কথা হয় চম্পা রানির সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নড়াইল মাছের আড়তে কাজ করেন। সারাদিন যে সব মাছ বিক্রি হয়, সব মাছের আঁশ বাড়িতে নিয়ে আসে। আমি আঁশগুলো নদীতে ধুয়ে পরিষ্কার করি। এরপর রোদে শুকায়। ২ দিন পর শুকনো আঁশ বস্তা করে ঘরে রাখি। ১ বছর পর সব আঁশ একসাথে বিক্রি করি।’ 

মাছের আঁশ ছাড়িয়ে যে বাড়তি আয় হয়, তা দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে স্থানীয় নারীদের। এ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তারা সংসারের খরচ চালান, আসবাবপত্র কেনেন, এমনকি গহনা তৈরিও করেন।

পঙ্গবিলা গ্রাম শিল্পী রানি বলেন, ‘মাছের আঁশ বিক্রি করে আমরা বাড়তি অর্থ আয় করি। এ টাকা দিয়ে আমরা সংসারে টুকিটাকি জিনিস কিনি। ঘরের আসবাবপত্র কিনি। এমনকি গহনা তৈরি করি এ টাকা দিয়ে। আমাদের স্বামীদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া লাগে না।’

নড়াইল রূপগঞ্জ মাছ বাজারের ব্যবসায়ী সৌমেন বলেন, ‘বাজারের বড় মাছের ক্রেতারা মাছ এখান থেকে কেটে নিয়ে যান। মাছের যে আঁশ অবশিষ্ট থাকে সেগুলো আমরা বস্তায় ভরে বাড়িতে নিয়ে যাই। পরে আমাদের পরিবারের সদস্যরা এগুলো সংরক্ষণ করে রাখেন, বছরে একবার বিক্রি করি। এ থেকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় হয়৷’

নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জেলা শহর থেকে প্রতিদিন কয়েক মণ মাছের আঁশ যায় ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। পরে রপ্তানি হয় বিদেশে— চীন, সিঙ্গাপুর ও জাপানে, যেখানে এসব আঁশ ব্যবহৃত হয় নানা পণ্যের কাঁচামাল হিসেবে। মাছের আঁশ সংরক্ষণ কাজের সাথে জড়িতদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ‘

কৃপা বিশ্বাস /এনএ
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর